মানবেতর জীবন যাপন করছে চরফ্যাশনের বেদে পল্লীর মানুষ। জীবন সংগ্রামের চাকা সচল রাখার জন্য মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরতে হয় বেদে সম্প্রদায়ের লোকজনকে। সিঙ্গা লাগানো, দাঁতের পোক ফালানো, বিষ বেদনা অপসারণ ও সাপের খেলা দেখানো এসব কাজেই এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ঘুরে বেড়ায় বেদেরা।
বর্তমানে বেদেদের এ কাজের তেমন একটা সাড়াশব্দ নেই। পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে চলছে তাদের অসহায় জীবন। আগের মত দেখা যায় না মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সিঙ্গা লাগানো, সাপ খেলা দেখানো। দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে বেদে সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। দীর্ঘ দুই বছর করোনার বয়াল থাবায় বেদেদের জীবন কে আরও পিছিয়ে দিয়েছে।
উপজেলার শশীভূষনে পুরাতন স্টিল ব্রীজ সংলগ্ন বালুর মাঠে ভ্রাম্যমাণ বেদে পল্লীতে কঠিন জীবন পার করছে বেদে সম্প্রদায়ের নারী, পুরুষ ও শিশুরা। ঝড় বৃষ্টির মধ্যেও খোলা আকাশের নিচে পলিথিন ও বাঁশের চেড়া দিয়ে ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে চলছে তাদের বসবাস। এখানকার ৫টি পরিবারের প্রায় ৩৫ জন সদস্য পার করছে মানবেতর জীবন যাপন।
বেদে পল্লীর মন্নান মিয়া জানান, বর্তমানে কোনো কাজকর্ম না থাকায় খেয়ে না খেয়ে আমরা এখন দিন পার করছি। মানুষের বাড়িতে গেলেই আজকাল তাড়িয়ে দেয়। আমাদের প্রতিদিন সিঙ্গা লাগানো, ঝাড়ফুক এবং বিভিন্ন ধরনের তাবিজ কবজ এবং সাপের খেলা দেখিয়ে যে টাকা আয় হত সেই টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চলতো। তবে, বর্তমানে কোনো কাজ কর্ম করা যাচ্ছে না। মানুষের বাড়িতে গেলেও হয়না আগের মত কাজ। এতো কষ্টে আছি যা বুঝানো যাবে না।
বেদে পাড়ার মুকদাত জানান, এখন পর্যন্ত কারো কোনো সহযোগিতা পাইনি। মাঝে মধ্যে শিশুসহ পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়েই থাকতে হয়। এভাবে আর কতদিন। সরকার আমাদের মতো বেদেদের জন্য খাদ্য ও অর্থ সাহায্য করলে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে অন্তত ডাল ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল নোমান রাহুল বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তালিকা করে তাদের কে সরকারি ভাতার আওতায় আনা হবে।