নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও আগামী বোরো মৌসুম পর্যন্ত সারের সংকট দেখা দেবে না বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ তথ্য জানান।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দুটি সার কারখানা বন্ধ হওয়ায় ৫-৬ লাখ টন উৎপাদন কম হবে। এটা নিয়ে আমরা উচ্চ পর্যায়ে কথা-বার্তা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সে ক্ষেত্রে আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হবে। কারণ কতগুলো শিল্প আছে যেখানে গ্যাসের খুব দরকার, অন্য কোনো এনার্জির উৎস নেই। শিল্প, বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে সঙ্গে আলোচনা করে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আগামী বোরো পর্যন্ত আশা করি সারের সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, সমস্যা হলো দাম নিয়ে। এই যে অস্বাভাবিক দাম ৩০০-৩৫০ ডলার পার টন সার আমরা দেড় হাজার ডলারে কিনছি। এর প্রভাব কীভাবে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর পড়ছে। প্রায় ৮১ বিলিয়ন ডলারে আমদানি করে রপ্তানি করতে হচ্ছে ৫২ বিলিয়নে। তা সত্ত্বেও সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সারের সরবরাহ অব্যাহত রাখা হবে। কোনো ক্রমেই যেন ঘাটতি না হয়।
গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, আবার বেশি দাম দিয়ে সার কিনতে হচ্ছে। এই পর্যায়ে দাম এ রকমই থাকবে নাকি দাম বাড়ানো হবে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। প্রধানমন্ত্রী খুবই চেষ্টা করছেন সারের দাম না বাড়াতে। আমরা ৮-১০ হাজার কোটি টাকা আমরা ভর্তুকি দিতাম। সেটা এখন ২৮-২৯ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। আইএমএফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক সব সময় প্রেসার দেয় যে, কেন তোমরা ভর্তুকি দেবে? তোমরা উন্নয়ন করলে দেশে উন্নতি হবে, তখন কৃষকরা লাভবান হবে। সেটার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সব সময় দ্বিমত পোষণ করছেন।
এই বেনিফিট কিন্তু গুলশানেও যায় না, ধানমন্ডি কিংবা আগ্রাবাদের বড়লোকরা পায় না। সারে যে ভর্তুকি দেওয়া হয়, এই বেনিফিট ধনী-গরিব সব কৃষক পায়। ধনী কে গ্রামে! কৃষি কাজ করে ধনী হওয়া যায়? সবচেয়ে যে ধনী মানুষ সে-ও ৭ দিন বনানী এলাকায় থাকতে পারবে না একটি বাসা নিয়ে। তারা সাধারণ জীবন-যাপন করে। সারে যে প্রণোদনা দেই সেটা বাংলাদেশের সাধারণ কৃষকরা পায়। কেউ একটু ধনী হলে উপজেলায় গিয়ে একটি বাড়ি করে বা টিনের ঘর বিল্ডিংয়ে রূপান্তর করে।