- টানা নয় দিন পর দুদিন ধরে লেনদেন ঊর্ধ্বমুখী
বিভিন্ন সমস্যায় ঈদের পর থেকেই পুঁজিবাজার নিম্নমুখী। টানা ৯ কার্যদিবস পতন পর হঠাৎ গত দুই কার্যদিবস উত্থানে রয়েছে পুঁজিবাজার। দীর্ঘ পতন পর হঠাৎ উত্থানে আসায় শান্তিতে রয়েছে বিনিয়োগকারীরা। এমনটিই জানালেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টারা।
স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, ঈদের পর টানা ৯ কার্যদিবস পুঁজিবাজার পতন। সেই পতনে ছেদ পড়লো গত দুই কার্যদিবস (সোমবার ও মঙ্গলবার)। গত সোমবারের মতো মঙ্গলবারও দেশের প্রধার পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সব ধরনের সূচক উত্থান হয়। এদিন (মঙ্গলবার) ডিএসইর বেশির কোম্পানি শেয়ার ও ইউনিট দর বাড়ে। তবে সিএসইর বেশির ভাগ কোম্পানি শেয়ার ও ইউনিট দর কমে। তবে আগের কার্যদিবস থেকে এদিন দুই স্টকে লেনদেন বেড়েছে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয় ৮৩৮ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবস সোমবার লেনদেন হয়েছিল ৬৩৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮২টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১৭৭টির, কমেছে ১৭২টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৩৩টির। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৯ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১১২ দশমিক ২৪ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ১২ দশমিক ৮২ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ১ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ১৯০ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ৩৩৩ দশমিক ৯৮ পয়েন্টে।
অপর পুঁজিবাজার সিএসইতে গতকাল মঙ্গলবার লেনদেন হয় ২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস সোমবার লেনদেন হয়েছিল ১৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯৮টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১২২টির, কমেছে ১৩৯টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৩৭টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৪৯ দশমিক ২২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৯৭২ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্টে।
এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ৬ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১৪ দশমিক ১৩ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৩০ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ১ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩২১ দশমিক ৫০ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ১৯৯ দশমিক ৫৬ পয়েন্টে, ১০ হাজার ৭৬৭ দশমিক ২৬ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ১৩২ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টারা বলছেন, নানা সমস্যার কারণে শত চেষ্টা করেও রেগুলেটররা পুঁজিবাজার উত্থান আনতে হিমশিম খাচ্ছে। পুঁজিবাজার সঠিক পথে আনতে সবার সম্মিলিত উদ্যোগও মুখ থুবড়ে পড়েছে। কোনো ইতিবাচক উন্নয়নই কাজেই লাগছিল না পুঁজিবাজারের পতন ঠেকাতে। কিন্তু হঠাৎ করেই গত দুই কার্যদিবস (সোমবার ও মঙ্গলবার) উল্টো দিকে ফিরে আসলো পুঁজিবাজার। উত্থানে ফিরে আসার কারণ হিসেবে সকলের বিশেষ নজরদারির বিষয়টি ওঠে আসলো। বিশেষ করে পুঁজিবাজারে অর্থ প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্টক ডিলারের ক্যাপিটালে নজরদারি করার সিদ্ধান্তের বিষয়টি এই উত্থানের মূল কারন বলে জানালেন সংশ্লিষ্টারা।
বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের ধাক্কা সহ এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং ঘোষণার পর এর নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে পুঁজিবাজারে জানিয়ে বিএসইসির এক কর্মকর্তা বলেন, এছাড়া পুঁজিবাজারে কিছুটা অর্থ সংকট রয়েছে। তবে এ সংকট খুব একটা বড় সমস্যা না। এটা সমধানের লক্ষে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে কিছু অর্থ সংস্থান হয়ে গেছে। এখন পুঁজিবাজারে ঢোকার পথে রয়েছে।
পুঁজিবাজারের পতন রোধে কমিশন সক্রিয় কাজ করছে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি পতন খুব গভীরভাবে অনুসন্ধান চলছে। পতনের প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমার দেখছি, পতনে কারো যোগসূত্র রয়েছে কিনা। একই সঙ্গে পুঁজিবাজার পতনের হোতা বা গুজব রটনাকারীদের ধরাও হচ্ছে। অবশ্য নানা উদ্যোগে টানা পতন পর গত দুইদিন ধরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার বলে জানান ওই কর্মকর্তা।