- আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযানে সুফল পেলেন নগরবাসী
কয়েকদিন আগেও গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রতিদিন লেগেই থাকতো অসহনীয় যানজট। প্রতিদিনই যানজটের নাকালে পড়ে ভোগান্তি পোহাতো মানুষ। তবে বর্তমানে অটোরিকশা-ইজিবাইকের অসহনীয় যানজট হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে গাজীপুর থেকে। এখন আর নেই যানজটের ভোগান্তি।
পুলিশ ও নগরবাসী জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চান্দনা চৌরাস্তা মোড়, শিববাড়ি, রাজবাড়ী রোড, জয়দেবপুর রেল ক্রসিং, কোনাবাড়ী এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায়ই লেগে থাকতো যানজট। এ যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হতো প্রায় সব শ্রেণির যাত্রীদের। আর যাত্রীরা যানজটে আটকা পড়ে থাকতেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এতে নষ্ট হতো সময় অযথা পুড়তো যানবাহনের জ্বালানি।
দীর্ঘদিন ধরেই মহাসড়কে অবাধে চলাচল করতো ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক। ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দুটি ছিল এসব যানবাহনের দখলে। এসব যানবাহন সড়ক-মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াতো। তিন চাকার এসব যানবাহন উল্টো পথে ও দ্রুত গতিতে চলাচল করে সৃষ্টি করতো যানজট। সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে জটলা বেঁধে থাকতো ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক। এসব যানবাহনের কারণে প্রতিদিন গাজীপুরে বিভিন্ন এলাকায় লেগে থাকতো যানজট, ভোগান্তিতে পড়তো যাত্রীরা।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের তৎপরতায় এবং ওইসব যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করায় যানজটের ভোগান্তি থেকে মানুষের মুক্তি মিলেছে। এমন কাজের জন্য পুলিশ প্রশংসার দাবিদার মনে করছেন গাজীপুর নগরবাসী। নগরবাসী পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে এ অভিযান অব্যাহত রাখতে জোর দাবি জানান। তারা বলছেন, বর্তমানে গাজীপুর মেট্টোপলিটন এলাকার কোথাও যানজট নেই। এখন যানজট মুক্ত গাজীপুর নগর। সড়ক-মহাসড়কের শৃঙ্খলা অনেকটাই ফিরে এসেছে।
গত ১৩ জুলাই গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) বর্তমান কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম যোগদান করেন। পরের দিন ১৪ জুলাই গাজীপুরের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। সভায় বক্তরা গাজীপুর মেট্টোপলিটন এলাকার বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এসব সমস্যা সমাধানে নিজের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে সবার সহায়তা কামনা করেন জিএমপি কমিশনার। সভায় তিনি কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী এমনটাই বলেন। তিন চাকার এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যানজটের দুর্ভোগ থেকে মানুষকে মুক্তি দিয়ে এটাই প্রমাণ করলেন তিনি, কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী।
হায়দার আলী নামে গাজীপুরের এক বাসিন্দা বলেন, অনেক কষ্ট সহ্য করা যায়। কিন্তু গরমে যানজটে আটকা থাকার কষ্টটা সহ্য হয় না। যানজটের কারণে জরুরি ভিত্তিতে কোনো রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া যায় না। সময় মতো অফিসেও যাওয়া যায় না। এদিকে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করায় নগরের কোথাও যানজট নেই। নগরবাসী এখন যানজট মুক্ত। এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে আমাদের আর যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হবে না।
হেলাল উদ্দিন নামে আরেকজন বলেন, কোনাবাড়ী থেকে গাজীপুর আদালতে যাওয়ার পথে মোড়ে মোড়ে যানজটে আটকা থেকে ভোগান্তিতে পড়তে হতো। এখন আর সেটা নেই। যানজটের কারণে কোথাও থামতে হয় না। গত কয়েকদিন ধরেই গাজীপুরে কোথাও যানজট দেখা যায়নি। মহাসড়কে তেমন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকও নেই। সেই সঙ্গে কোথাও যানজটও নেই।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি-ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, যানজট নিরসনে এবং মানুষের ভোগান্তি কমাতে পুলিশ কাজ করছে। মহাসড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক চলাচল বন্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। গত চারদিনে প্রায় এক হাজার অটোরিকশা ও ইজিবাইক আটক করা হয়েছে। সবার সহযোগিতা থাকলে মানুষের ভোগান্তি কমাতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আনন্দবাজার/শহক