তীব্র তাপদাহে পুড়ছে মানুষ-মাঠ-ঘাট
বৃষ্টির ভরা মৌসুম আষাঢ় মাসে বৃষ্টির দেখা নেই। শুধু মানুষ নয়, তাপদাহে পুড়ছে মাঠ-ঘাট এবং শস্যও। গত কয়েকদিন ধরে মাঝারি থেকে তীব্র তাপদাহে ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির। ফলে আমন ধান রোপণ করতে পারছেন না টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার কৃষকরা।
বৃষ্টির অভাবে বীজতলার ধানের চারাও মরে যাচ্ছে। যার কারণে মহবিপাকে পড়েছেন কৃষক। অসহনীয় গরমে জনজীবনে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। বাড়ছে নানান রোগের শঙ্কা। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের কারণে এরইমধ্যে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়রিয়া, আমাশায়, সর্দি-জ্বরসহ নানান রোগে।
এ অবস্থায় স্থানীয় কৃষি বিভাগ সেচযন্ত্র চালুর মাধ্যমে জমিতে পানি নিয়ে ধান রোপণের পরামর্শ দিচ্ছে। উপজেলার গালা গ্রামের কৃষক হাফিজুল ও মোজাম্মেল বলেন, আমন ধানের ক্ষেত প্রস্তুত ও রোপণ সম্পূর্ণ বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভরশীল। গত দুই সপ্তাহ যাবৎ আষাঢ়ের বৃষ্টির এই ভরা মৌসুমে বৃষ্টির কোনো দেখা নেই। জমিতে পানি না থাকায় আমন ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। একদিকে পানির অভাবে জমি প্রস্তুত করা যাচ্ছে না অপরদিকে পানির অভাবে বীজতলা শুকিয়ে ধানের চারা মরে যাচ্ছে। এ অবস্থায় মহাবিপদে আছে চাষিরা।
উপজেলার ঝুনকাইল গ্রামের কৃষক আবু হানিফ বলেন, আষাঢ় মাস আমন রোপণের উপযুক্ত সময়। বিগত দিনে এই সময়ে জমিতে আমন ধান লাগানো প্রায় শেষের হয়ে যায়। কিন্তু এবার অনাবৃষ্টির কারণে জমিতে পানি না থাকায় ধান রোপণ করা যাচ্ছে না। আমন ধান চাষে খরচ কম ও লাভজনক। তাই আমনচাষে বিঘ্ন ঘটলে প্রান্তিক চাষিরা লোকসানে পড়বেন।
কালিয়াগ্রামের মিন্টু মিয়া বলেন, বৃষ্টি নেই, জমি ফেটে চৌচির হয়ে আছে। বৃষ্টির আশায় অনেকেই শুকনো জমি চাষ করে রাখছে। কবে বৃষ্টি হবে, কবে জমিতে ধান রোপণ করবে সেই অপেক্ষায় আছে কৃষকরা। ওই কৃষক আরো বলেন, কেউ কেউ সেচযন্ত্রের মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা করলেও অনেক কৃষকই তা পারছে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমিতে। আষাঢ় মাস রোপা আমনের ভরা মৌসুম। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় আমন রোপণে বিলম্ব হচ্ছে। কৃষকদের সম্পূরক সেচের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কৃষকদের সেচযন্ত্র চালু রেখে সেচ প্রদানের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।