বেসরকারি খাতের ৪০টি ব্যাংকের মধ্যে গড়ে ৯ শতাংশের উপরে সুদ নিচ্ছে ৩৬ ব্যাংক। গড়ে ২৯ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে দুই অঙ্কের সুদ গুণতে হচ্ছে গ্রাহকদের। বেসরকারি ব্যাংকগুলো গড়ে ১০ দশমিক ৪৩ শতাংশ সুদ নিচ্ছে এখনও।
কিন্তু আরও এক বছর আগে ব্যাংঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার কথা ছিল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পাওয়ার করণেই সুদহার কমানো সম্ভব হচ্ছে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবর শেষে পুরো ব্যাংক খাতের গড় সুদহার ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ। সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবাই এক অঙ্কের সুদহার বাস্তবায়ন করতে পারলেও পিছিয়ে পড়েছে অধিকাংশ বেসরকারি ব্যাংক। এছাড়া বিদেশি ২টি ব্যাংকের ঋণের গড় সুদহার ১০ শতাংশের উপরে। ব্যাংক ঋণের সুদহার কমাতে আইনী বাস্তবায়নের প্রয়োজন বলে মত বিশ্লেষকদের।
চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে। এত ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামানকে প্রধান করা হয়। কমিটিকে কীভাবে ব্যাংক ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে একটি সুপারিশ উপস্থাপনের নির্দেশনা দেয়া হয়।
সুপারিশমালা চূড়ান্ত হলেও তা এখনও প্রকাশ করা হয়নি। জানা গেছে খুব শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সার্কুলার জারির মাধ্যমে শিল্প ঋণে এক অঙ্কের সুদহার বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হবে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে ব্যাংকের কর্পোরেট করহার ৪২.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এতে ব্যাংকগুলো ২.৫ শতাংশ ট্যাক্স সুবিধা পায়। ফলে ১৩ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকার সুবিধা পেয়েছেন ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকরা।
সব মিলিয়ে শুধু এ সুবিধাগুলো থেকে ব্যাংকগুলোর লাভ হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় সরকারি তহবিল জমার হার বৃদ্ধি, পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত থাকার মেয়াদ ও একক পরিবারের সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি, ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ১০ বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল এবং ঋণ শ্রেণিকরণ নীতিমালা শিথিলকরণ সুবিধা দেয়া হয়েছে। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
আনন্দবাজার/ইউএসএস