ঢাকা | শুক্রবার
২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিস্তার পেটে বসতভিটা

তিস্তার পেটে বসতভিটা

তিস্তার পানি কমলেও উজানের নেমে আসা ঢলে নদীতে তীব্র স্রোত দেখা দিয়েছে। এতে নীলফামারীর ডিমলায় আবারো তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙনকবলিত এলাকায় বালুভর্তি বস্তা ফেললেও তাতেও ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না।

সরজমিনে দেখা যায়, খালিশা চা পানি ইউনিয়নের ছোটখাতা মুন্সীপাড়া গ্রামের ৭ টি বসতবাড়ি ভিটাসহ জমি গত সোমবার সকাল থেকে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সেই সঙ্গে ভাঙছে ফসলি জমি। তীরবর্তী এলাকা বাসিন্দারা জানান, তিস্তায় পানি কমলেও স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারীরা ভাঙনের কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। কারণ পানি কমার সঙ্গে সঙ্গেই ভাঙনের তীব্রতা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘরবাড়ি ছাড়াও বেশকিছু আবাদি জমিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

পানিবন্দি ও ভাঙনকবলিত পরিবাগুলো জানান, গত কয়েকদিন পানি বন্দি থাকার পর শুরু হয় তিস্তার ভয়াভয় ভাঙন। আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরাতে থাকি। এর মধ্যে অনেকের ঘরবাড়ি প্রবল স্রোতে ভেসে যায়। ভাঙন কবলিত হানিফ আলী কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ১ দিন আগেও আমার বসতভিটা ও ফসলী জমি ছিল আজ সব নদীতে বিলিন। চার দিকে পানি আর পানি। এখন পরিবার নিয়া কোথায় যাবো। এখন ঘর করে কই থাকব তারও জায়গা নেই। বৃদ্ধা মা ও ছেলে মেয়েকে নিয়ে কই যাব কি খাব তা একমাত্র আল্লাহ জানে।

খালিশা চাপানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান কেন্জুল জানান, তার ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ছোটখাতা, চর ভেন্ডাবাড়ি, বাইশপুকুরসহ কয়েকটি গ্রামের কমপক্ষে ১০টি পরিবারের বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন সময়ে বালুর বস্তা ফেললেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, অব্যাহত ভাঙনে তিস্তার গতিপথ পরিবর্তিত হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নদী ড্রেজিং করে সোজা করা না হলে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হবে না।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ দৌলা জানান, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হলেও নদীতে স্রোতের বেগ তীব্র। ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পেলে ভাঙন আরও বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। নদীতে স্রোতের বেগ বেশি থাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সার্বিক সহযোগিতা ও সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন