ঢাকা | মঙ্গলবার
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেতৃত্বহীন কেন্দ্রীয় ব্যাংক

নেতৃত্বহীন কেন্দ্রীয় ব্যাংক
  • নতুন গভর্নরের যোগদান ১২ জুলাই

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব কাজই চলছে আগের মতো। নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছেন সবাই। তবে নেই কোনো গভর্নর। গত রবিবার ফজলে কবিরের বিদায়ের পর থেকেই নেতৃত্ব শূন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে গভর্নরের অবর্তমানে নিজ নিজ ক্ষেত্রে এ দায়িত্ব পালন করবেন ডেপুটি গভর্নররা। গতকাল সোমবার এ তথ্যই জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।

সিরাজুল ইসলাম জানান, টানা ছয় বছরের বেশি সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করে গত রবিবার বিদায় নিয়েছেন ফজলে কবির। নিয়োগ পাওয়া নতুন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার আগামী ১২ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দেবেন। আজ থেকে নতুন গভর্নর যোগদানের আগ পর্যন্ত দৈনিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে চার ডেপুটি গভর্নর স্ব স্ব ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করবেন। আর ডেপুটি গভর্নর-১ আহমেদ জামাল গভর্নরের দৈনিক ডাক দেখবেন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠাবেন। বিদায়ী গভর্নর যোগদানের আগেও এমন পরিস্থিতি হয়েছিল। ওই সময়ের ডেপুটি গভর্নররা একইভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এর আগে রবিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব মো. জেহাদ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংককে গভর্নরের অবর্তমানে দৈনিক কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়। একই আদেশে বলা হয়, গভর্নর ফজলে কবিরের মেয়াদপূর্তিতে আগামী ৪ জুলাই থেকে নতুন গভর্নর যোগদানের পূর্ব পর্যন্ত দৈনন্দিন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নররা স্ব স্ব ক্ষেত্রে তাদের দৈনিক কার্যক্রম করবেন। ডেপুটি গভর্নর-১ আহমেদ জামাল গভর্নরের দৈনিক ডাক দেখবেন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রেরণ করবেন। অর্থাৎ গভর্নর পদে কেউ না থাকলেও অনেকটা ভারপ্রাপ্ত গভর্নর হিসেবেই দায়িত্ব পালন করতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামালকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদারের সরকারি চাকরির মেয়াদ ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত। গভর্নর পদে যোগ দিতে হলে তাকে সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিতে হবে। আগামী ১১ জুলাই থেকে তার স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন রাষ্ট্রপতির কার্যালয় অনুমোদন দিয়েছে। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর দ্বাদশ অধ্যায়ে ‘অবসর, ইস্তফা ইত্যাদি’ বিষয়ে বিবরণ দেওয়া আছে।

এতে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর যেকোনো সময় একজন সরকারি কর্মচারী অবসর নিতে পারেন। তবে অবসর গ্রহণের ৩০ দিন আগে ওই কর্মচারীকে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার ইচ্ছা লিখিতভাবে জানাতে হবে। আরও উল্লেখ আছে, এই ইচ্ছা চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে এবং তা সংশোধন বা প্রত্যাহার করা যাবে না। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ থাকলেও ৪ জুলাই গভর্নর পদে যোগ দিলে আব্দুর রউফ তালুকদারকে আইন লঙ্ঘন করতে হবে এবং পেনশন পাওয়ার ক্ষেত্রেও তার সুবিধা কমবে।

সাধারণত তিন থেকে চার দিন বা বড়জোর এক সপ্তাহ সময় হাতে নিয়ে বড় ধরনের পদে নিয়োগ দিয়ে থাকে সরকার। কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ আব্দুর রউফ তালুকদারকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে তিন সপ্তাহ আগে। সেদিন ছিল ১১ জুন, অর্থাৎ সরকারি ছুটির দিন শনিবার। এ কারণেই দেরিতে যোগদান করবেন নতুন গভর্নর। আগামী ১০ জুলাই ঈদুল আজহা উদযাপন হবে। পরদিন ছুটি। এরপর অফিস খুলবে ১২ জুলাই। ওইদিনই নতুন গভর্নর হিসেবে যোগ দেবেন আব্দুর রউফ তালুকদার।

সংবাদটি শেয়ার করুন