ডিএসইতে ৮শ কোটি, সিএসই ২০
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বুধবার লেনদেন কমে ৮শ কোটি টাকার ঘরে অবস্থান করে। অপরদিক চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন কমে ২০ কোটি ঘরে চলে এসেছে। দুই স্টকের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। তবে উভয় স্টকের প্রধান সূচক উত্থান হয়েছে।
বিভিন্ন মহলের শত চেষ্টায় পুঁজিবাজার উত্থানে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি আগারগাওয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, সবাই ধৈর্য ধরুন,পুঁজিবাজার ভালো হবে। শিবলী রুবাইয়াতের এমন আশ্বাসের ঠিক পরের কার্যদিবস সত্যিই ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। সেই উত্থান পরে মন্দায় রূপে ফিরে এসেছে।
আসন্ন অর্থবছরের (২০২২-২৩) বাজেট পেশের পর তিন কার্যদিবস পুঁজিবাজার দরপতন হয়। ওই তিন কার্যদিবসে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ে। এই পতন পর দুই কার্যদিবস উত্থান হয়। সেই উত্থান ধরে রাখতে পারলো না। ফিরে আসলো ফের পতনে। বর্তমানে ভাল মন্দ মিলেই চলছে পুঁজিবাজার লেনদেন।
ডিএসইতে এদিন ব্যাংক, বস্ত্র, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইটি, পাট, পেপার, ওষুধ রসায়ন এবং চামড়া খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। অপরদিক সিমেন্ট, সিরামিক, খাদ্য আনুষঙ্গিক, বিমা, বিবিধ এবং সেবা আবাসন খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। এদিন নন ব্যাংকিং আর্থিক, জ্বালানি শক্তি, ফান্ড, টেলিকম এবং ভ্রমন অবসর খাতের কোম্পানির শেয়ার দর বাড়া-কমার ছন্দ ছিল। শেয়ার দর বাড়া-কমার একই চিত্র ছিল পুঁজিবাজার সিএসইতে।
এদিন পুঁজিবাজারে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। এর মধ্যে ডিএসইর ৪৫ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং সিএসইর ৪৫ দশমিক ১৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। অপরদিকে ডিএসইর ৪১ দশমিক ২১ শতাংশ এবং সিএসইর ৩৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর এই ধরনের বৃদ্ধি-হ্রাস স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা বলে জানায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।
ডিএসইতে গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ৮০৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার। গত মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৮১৮ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১৫৭টির, কমেছে ১৭২টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৫২টির। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৫০ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে। ডিএসই-৩০ সূচক দমমিক ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৯৫ দশমিক ১৮ পয়েন্ট। এছাড়া ডিএসইএস সূচক দশমিক ২৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৮৫ দশমিক ৪০ পয়েন্টে।
ডিএসইতে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ৩৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে শাইনপুকুর সিরামিকস ২৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ২৩ কোটি ২১ লাখ টাকা, বিডি ফাইন্যান্স ২১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, ফু-ওয়াং ফুড ২১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ২১ কোটি ২৮ লাখ টাকা, আরএকে সিরামিক ১৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা, ইন্ট্রাকো ১৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং একমি পেস্টিসাইডস ১৪ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
অপর পুঁজিবাজার সিএসইতে এদিন (বুধবার) লেনদেন হয়েছে ৬০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। গত মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৬০ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১১৬টির, কমেছে ১৩৫টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪৮টির। সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২৬ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬৯০ দশমিক ৪৯ পয়েন্টে।
এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ৩ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১৪ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ১৫ দশমিক ৭১ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ১ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৭৩ দশমিক ১৭ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৫৪৪ দশমিক ২০ পয়েন্টে, ১১ হাজার ২০৩ দশমিক ৫২ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৮৩ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে।
সিএসইতে ফার্স্ট জনতা ব্যাংক ফান্ডের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন ফার্স্ট জনতা ব্যাংক ১৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংক ১ কোটি ৩৯ রাখ টাকা, জেএমআই হসপিটাল ৫৮ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ৫৬ লাখ টাকা, শাইনপুকুর ৫৪ লাখ টাকা, এ্যাপোলো ইস্পাত ৫০ রাখ টাকা, একমি পেস্টিসাইডস ৪৪ লাখ টাকা, ইন্ট্রাকো ৪২ লাখ টাকা, কেয়া কসমেটিকস ৪০ রাখ টাকা এবং ফু-ওয়াং সিরামিক ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।