দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বাজারে আসতে এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের স্পন্দন ব্র্যান্ডের রাইস ব্রান অয়েল। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে স্পন্দন রাইস ব্রান অয়েলের মোড়ক উন্মোচনকালে কোম্পানিটির এ তথ্য জানিয়েছে।
মোড়ক উন্মোচনকালে এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মিনোরি বাংলাদেশের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আন্তরিকতায় এ বছর আমরা উৎপাদন শুরু করেছি। এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এবং তিতাস গ্যাস আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের সমস্যাগুলো সমাধান করে দিলে দেশে চলমান ভোজ্যতেলের সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারবে এমারেল্ড অয়েল।
আফজাল হোসেন বলেন, এমারেল্ড অয়েলের দুটি প্রোডাকশন ইউনিট আছে। এর একটির ধানের কুঁড়া ক্র্যাশ করার ক্ষমতা ১৮০ টন এবং অপরটির ক্ষমতা ১৫০ টন। ইউনিট দুটির দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ৩৩০ টন। গ্যাসের অপর্যাপ্ত সরবাহের কারণে শুধু ১৮০ টনের ইউনিটটি সচল আছে। এই ইউনিটে ধানের কুঁড়া ক্র্যাশ করে ৩৫ মেট্রিক টনের মতো অপরিশোধিত তেল পাওয়া যায়। এখান থেকে দৈনিক পরিশোধিত তেল পাওয়া যায় ২৬ মেট্রিক টন। এ সক্ষমতা নিয়ে আমরা প্রতিদিন ২৬ মেট্রিক টন তেল বাজারজাত করতে পারব।
উৎপাদন শুরুর মাত্র ছয় মাসের মধ্যে আমরা ব্রেক ইভেনে চলে আসছি জানিয়ে আফজার হোসেন বলেন, দিনের পুরো সময় গ্যাস সরবরাহ পেলে আমরা পুরোদমে উৎপাদনে ফিরতে পারব। এমন সহায়তা পেলে আশা করছি খুব শিগগিরই শেয়ারহোল্ডারদের ভালো ডিভিডেন্ড দিতে পারব।
উৎপাদন শুরুর পর আমাদের দুটি বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথমটি হলো গ্যাসের সংকট। দ্বিতীয়টি ব্যাংক লোন পুনঃতফসিল। কোম্পানিটি যখন বন্ধ হয়ে যায়, তখন তিতাস গ্যাসের বকেয়া ছিল ৩২ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ২০২১ সালে তিতাস গ্যাস লাইনচার্জসহ এক কোটি ৬৩ লাখ টাকা বকেয়া বিলের একটি স্টেটমেন্ট দেয়। এ টাকার পুরোটাই শোধ করা হয়েছে।
অতীতে রেকর্ডকৃত এই কোম্পানির লাভ বা ক্ষতি যাই হোক না কেন, আমাদের বিনিয়োগের মূল উদ্দেশ্য হল এটিকে একটি লাভজনক কোম্পানিতে পরিণত করা এবং বছরের এবং বছরের শেষে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রদান করা। কোম্পানি পরিবর্তন হলেও আগের ব্র্যান্ড স্পন্দন নামেই তেল বাজারজাত করা হবে।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম ও মিনোরি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মিয়া মামুন। এতে বক্তব্য রাখেন বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক সাইফুর রহমান, ল্যাবএইড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল খাদ্য তত্ত্ববিদ ডা. নুসরাত জাহান দীপা, ল্যাবএইড হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিয়াক বিভাগের ডা. মো. লোকমান হোসেন।
জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে শেরপুরে অবস্থিত ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন শুরু করেছে এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ। সম্প্রতি জাপানি বিনিয়োগে পরিচালিত মিনোরি বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্পন্দন রাইস ব্রান অয়েল বাজারজাত হতে যাচ্ছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার তিন বছরের মাথায় ২০১৬ সালে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পরে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে মিনোরি বাংলাদেশ নামে জাপানি একটি কোম্পানি এমারেল্ড অয়েলের ৭ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার কিনে মালিকানায় আসে। জাপানি কোম্পানির হাত ধরেই প্রতিষ্ঠানটি আবার উৎপাদনে ফিরেছে।