ঢাকা | শনিবার
২৫শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টিসিবির পণ্যে অনিশ্চয়তা

টিসিবির পণ্যে অনিশ্চয়তা

যশোরে ফ্যামিলি কার্ডে টিসিবি’র পণ্য পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করার নিয়ম থাকলেও সেই কার্ড নিয়েই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন বলছে কার্ড রয়েছে পৌর কাউন্সিলরদের কাছে। আর পৌর কাউন্সিলর বলছেন তাদের কাছে সব গ্রাহকের কার্ড নেই। আর যে সব স্থানে টিসিবি পণ্য বিক্রি হচ্ছে সেখানে ফ্যামিলি কার্ডের নাম ও খাতায় এন্ট্রি নামের মিল থাকছে না।

যশোরে গত রবিবার থেকে ফের শুরু হয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিবিসি) পণ্য বিক্রি কার্যক্রম। এবারও ফ্যামিলি কার্ড দেখিয়ে কিনতে হচ্ছে সরকারের ভর্তুকি মূল্যের পণ্য সয়াবিন তেল, মসুরির ডাল ও চিনি। কিন্তু যশোরে কার্ড উধাও হয়ে গেছে। গত ঈদুল ফিতরের আগে শেষ দফায় যশোর জেলায় এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৩৯ পরিবার দুই দফায় পেয়েছিল টিসিরি পণ্য। ওই সময় উপকারভোগীদের কার্ড জমা নেন সংশ্লিষ্টরা। তখন বলা হয়েছিল এই কার্ডে আর পণ্য পাওয়া যাবে না। যে কারণে কার্ড জমা রাখা হচ্ছে। তারপর থেকেই টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। সামনে কোরবানি ঈদ।

এ উপলক্ষে সরকার সারাদেশে ফ্যামিলি কার্ডধারীদের মধ্যে সাশ্রয় মূল্যে দু’দফা পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে। এবারও কার্ডধারী ভোক্তা প্রতিবার সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল ও এক কেজি চিনি পাবেন। কিন্তু অধিকাংশ গ্রাহকের কাছে কার্ড নেই। তাই পণ্য কেনা নিয়ে বিপত্তি সৃষ্টি হয়েছে। 

যশোরের উপশহর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে আসা অধিকাংশরাই কার্ড দেখাতে না পারায় তাদের পণ্য দেয়া হয়নি। গত ঈদে শেষ দফায় কার্ড জমা রেখে পণ্য দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই কার্ড জমা রাখার বিষয়টি অস্বীকার করা হচ্ছে।

উপশহরের বাসিন্দা সাংবাদিক জাহিদুল কবীর মিল্টন জানান, তার কার্ডের বিপরীতে বিতরণ খাতায় শাহিনুর নামে একজনের নাম এন্ট্রি দেখা যায়। এক পর্যায়ে তিনি চ্যালেঞ্জ করেন। পূর্বের ফ্যামিলি কার্ডের ফটোকপি দেখান। তখন সংশ্লিষ্টরা ভুল হয়েছে দাবি করে টিসিবির পণ্য দেন। সাংবাদিক মিল্টন অভিযোগ করেন, কার্ড দেখাতে না পারার কারণে বহু ভোক্তাকে শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে।

শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার সেলিম, খড়কি হাজামপাড়ার রশিদ মোল্লা ও ষষ্ঠীতলাপাড়ার মিন্টু দাস বলেন, টিসিবির পণ্য কবে কোথায় বিক্রি করা হচ্ছে তা জানা যাচ্ছে না। যেকারণে সাশ্রয়ী মূল্যের এই পণ্য তারা কিনতে পারছে না। আবার তাদের কার্ড নিয়ে নেওয়ায় নতুন করে কার্ড দেওয়া হবে কিনা সেটা জানতে পারছেন না।

যশোর টিসিবির ডিলার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান বলেন, সব কার্ড ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের কাছে জমা আছে। তারা ভোক্তাদের বাড়ি কার্ড পৌঁছে দিয়ে পণ্য বিতরণের দিনক্ষণ জানিয়ে দেবেন। কার্ড উধাও হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।

যশোর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহেদ হোসেন নয়ন বলেন, আমার কাছে কোনো কার্ড জমা নেই। জমাকৃত কার্ড গেল কোথায় জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো সদুত্তোর দেননি।

৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাজিবুল আলমকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, কিছু কার্ড মিসিং হয়েছে। যাদের কার্ড জমা আছে, তাদের ফোন করে ও মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠিয়ে জানিয়ে দিচ্ছি। যাদের কার্ড মিসিং হয়েছে তারা কীভাবে পণ্য পাবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ যোগাযোগ করলে নিশ্চয় একটা উপায় বের হবে। 

যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, সব কার্ড ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের কাছে জমা আছে। তিনি বলেন, গত ঈদে যেসব ভোক্তা কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য পেয়েছিলেন, এবারও তারাই পাবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন