সকালে সূর্য উঠার আগেই বির্স্তীণ আড়িয়াল বিল থেকে কুড়িয়ে নৌকায় করে আনা হচ্ছে অসংখ্য শাপলা। শাপলা আটি বেঁধে তুলা হচ্ছে পিকআপ ভ্যানে। সন্ধ্যার অধাঁর নামার আগেই শাপলা বোঝাই পিকআপ ভ্যানগুলো ছুটছে শহরের বিভিন্ন হাট বাজারে। বর্ষা মৌসুমে বিলের শাপলা কুড়িয়ে নিম্নআয়ের অনেক পরিবারের সংসার চলে। দিনের কয়েক ঘণ্টা শাপলা কুড়ানোর মধ্যে দিয়ে একেক জনের ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা কামাই হচ্ছে। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বিখ্যাত আড়িয়াল বিল এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই লক্ষ্য করা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এ অঞ্চলের খাল, বিল নদীনালা ও জলাশয়ে বর্ষার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আড়িয়াল বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে এরই মধ্যে অসংখ্য শাপলার দেখা মিলছে। উপজেলার গাদিঘাট, শ্যামসিদ্ধি, হাঁসাড়া, আলমপুর, শ্রীধরপুর, বাড়ৈখালী সংলগ্ন আড়িয়াল বিল এলাকার বিভিন্ন রাস্তার পাশে শাপলা ভর্তি নৌকা রাখা হয়েছে। স্থানীয়রা এসব শাপলা বিক্রি করছেন। শাপলার শাপলার আটি গুনে গুনে পিকআপ ভ্যান বোঝাই করছেন শ্রমিকরা।
সুমন খান, মো. মোশারফ, নুর হোসেন, আমির হোসেন, শাহজান, দেলোয়ার হোসেন, বলাই রামসহ অনেকেই বলেন, বর্ষা মৌসুমে তেমন কোন কাজ থাকেনা। এ সময় বিনা পুজীতে শাপলা কুড়িয়ে বিক্রির মাধ্যমে টাকা রুজী করতে পারছেন। আড়িয়াল বিল অঞ্চলের প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের সংসার চলে শাপলা বিক্রির টাকায়। বিলে শাপলা কুড়ানোর পাশাপাশি মাছ শিকার করে জীবন নির্বাহ হচ্ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নৌকা দিয়ে শাপলা কুড়িয়ে বাড়ি ফিরেন। বিকালে পাইকার এসে এসব শাপলা নিয়ে যান। কার্তিক-পৌষ মাস পর্যন্ত পানি নামার আগমূহুর্ত শাপলা আড়িয়াল বিলে শাপলা কুড়ানো হবে।
চাঁন মিয়া, সেলিম শেখ, মালেকসহ কয়েকজন পাইকার জানান, বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে রাস্তার পাশ থেকে কুড়ানো শাপলা সংগ্রহ করেন তারা। পিকআপে করে এসব শাপলা রাজধানীর কাওরান বাজার, সাভার, যাত্রাবাড়িসহ বিভিন্ন সবজির পাইকারী বাজারে নিচ্ছেন।
জানা যায়, প্রায় ৬০/৭০টি শাপলা দিয়ে ১টি আটি বাঁধা হয়। প্রতি আটি শাপলা পাইকারের কাছে বিক্রয় করা হয় ১২-১৬ টাকা দরে। একজন দিনে কমপক্ষে ৫০ আটি শাপলা কুড়াতে পারেন। আড়িয়াল বিল এলাকার শ্রীনগরের বিভিন্ন স্থান থেকে গড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ পিকআপ শাপলা ঢাকা যাচ্ছে। গ্রামগঞ্জে কিংবা শহরের মানুষের কাছে সু-স্বাদু সবজি হিসেবে দিনদিন শাপলার কদর বাড়ছে।