ঢাকা | শনিবার
১৯শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৩রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভয়-আতঙ্কে নির্ঘুম রাত

ভয়-আতঙ্কে নির্ঘুম রাত
  • খাবার সংকটে উত্তরের পানিবন্দিরা

উজানের ঢল আর অব্যাহত বর্ষণে টইটম্বুর তিস্তার পেট। আষাঢ়ের শুরুতেই হু হু করে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। বিপৎসীমা ছাপিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে। তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা কাটাচ্ছে নির্ঘুম রাত। পানি প্রবাহ বেড়ে তলিয়ে গেছে বাদাম, মরিচ, পেঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়া ও ভুট্টাসহ বিস্তীর্ণ চরের বিভিন্ন উঠতি ফসল। অন্তত ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ হাঁটু বা কোমর পানিতে বন্দি দশায় আছেন। এসব মানুষের হাতে এখনো পৌঁছেনি কোনো সহায়তা।

দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে রাখা হয়েছে। পানি অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় তিস্তার চর এলাকাগুলো প্লাবিত হতে শুরু করেছে। টানা বৃষ্টিপাতে তিস্তা ছাড়াও মানাস, টেপা, ঘাঘট, করতোয়া, যমুনেশ্বরী, আখিরা-মাচ্চা নদীসহ জেলার অন্যান্য নদ-নদী ও খাল-বিলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ক্রমেই বাড়ছে দুর্ভোগ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। আর তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আর তা হলে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে আবারও বিপৎসীমা উপচে যাবে।

প্লাবিত এসব এলাকার আঁকাবাঁকা মেঠোপথ, বাঁশের সাঁকোসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিবর্ণ তিস্তাপাড়ের মানুষদের চোখে কয়েকদিন থেকে ঘুম নেই। কখন কী হয় সে চিন্তাই এখন মনে ভর করেছে তাদের। সঙ্গে হাড়ভাঙা শ্রমের ফসলি খেত পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।

লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি গ্রামের পানিবন্দি সামিনা বেগম, বৃদ্ধা ফাতেমা বেওয়াও ক্ষুদ্ধ তিস্তার বুকে পানি বাড়তে থাকায় টানা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দুর্ভোগে থাকা এই দুই নারীর মতো অন্যদেরও অভিযোগের শেষ নেই। কয়েকদিন ধরে পানিবন্দি থাকা এসব মানুষ চুলোয় আগুন জ্বালাতে পারছে না। তাদের অনেকেরই দু’বেলা খাবার মতো ব্যবস্থাও ফুরিয়েছে। এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যান-মেম্বার কারও কাছ থেকে কোনো খাদ্য সহায়তাও মেলেনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন