পরিবেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করে প্লাস্টিকের ব্যবহার অনেকবার নিরুৎসাহিত করেছে সরকার। এরঅংশ হিসেবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সব ধরনের পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগের ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়। তবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের পলিথিন ও প্ল্যাস্টিক ব্যাগের ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছেন।
উভেন প্লাস্টিক ব্যাগসহ মোড়কজাত করার পলিথিনও রয়েছে শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাবে। স্থানীয় উৎপাদক পর্যায়ে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি এবং কর বোঝা কমাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে বাজেট বক্তৃতায় জানান অর্থমন্ত্রী। এদিকে পরিবেশবাদীরা এ প্রস্তাবের নিন্দা করে বলেছেন, এতে পরিবেশের জন্য প্রচণ্ড ক্ষতিকর একবার ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া হয় (সিঙ্গেল ইউজ) এমন প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়বে।
পরিবেশবাদী সংগঠন বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ণ কেন্দ্র (ক্যাপস) -এর চেয়ারম্যান ও বাপার অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, শুল্ক প্রত্যাহারের এ প্রস্তাবনায় আমি অবাক হয়েছি। গত ১০ বছরের বাজেট পর্যালোচনায় পরিবেশে বরাদ্দ কমছিল এবং পরিমাণও কম ছিল। এবার এসে একটু বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে। সেটাকে শাধুবাদ জানাই, কিন্তু প্লাস্টিক ও পলিথিনে শুল্ক প্রত্যাহারের মাধ্যমে ভালো একটি বাজেটকে সীমাবদ্ধতায় নিয়ে যাওয়া হবে।
এমনিতেই পরিবেশগত সবচেয়ে বড় সমস্যার একটি হলো প্লাস্টিক। এটার কারণে মাটি,বায়ু, পানি নষ্ট হয়ে ৩ ধরণের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তারপরও যদি এসব পণ্যের দাম কমানো হয় তাহলে এটা দূষণকারীদের প্রণোদনা-উৎসাহ দেয়া হবে। পরিবেশবান্ধব বাজেট বলতে হলে এসব সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনা করতে হবে। তাছাড়া পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্রের দামও বাড়ছে। আমরা এই দুটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনার প্রস্তাব ও দাবি জানাচ্ছি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫’ অনুসারে, সব ধরনের পলিব্যাগ অথবা পলিথিন বা পলিপ্রোপেলিন থেকে প্রস্তুতকৃত পণ্য নিষিদ্ধ। তবে এই আইনে রাখা একটি বিধানে কিছু কাজে এগুলি ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সব ধরনের পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগের ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়। উল্লেখ্য, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত পরিবেশ রক্ষায় পাটের তৈরি ব্যাগের ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে এই শুল্কারোপের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
আনন্দবাজার/শহক