ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে চীনে রপ্তানি বৃদ্ধির বিকল্প নেই

বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে রপ্তানি বৃদ্ধির বিকল্প নেই। চীন পণ্যের একটি বিশাল বাজার। চীনের বাজারে বাংলাদেশের অনেক পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে, আমাদের এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ন ইউনিয়নসহ যে সকল দেশে তৈরী পোশাক রপ্তানি করছে, চীন তার চেয়েও কয়েক গুণ বড় বাজার। আমাদের শিল্পের যন্ত্রপাতি ও কাঁচালসহ বিভিন্ন পণ্য চীন থেকে আমদানি করতে হয় কিন্তু আমরা সে পরিমাণ পণ্য চীনে রপ্তানি করতে পারি না। সে কারণেই চীনের সাথে আমাদের বাণিজ্য ব্যবধান অনেক বেশি। আমাদের শুধু তৈরী পোশাকের উপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না। অন্যান্য রপ্তানি পণ্য উৎপাদন করে চীনে তা রপ্তানি করেই বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল বুধবার ঢাকায় প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে হোটেলে রিসার্চ এন্ড পলিচি ইনট্রিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট(রেপিড) এবং বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি আয়োজিত “মেকিং দি মোস্ট অফ মার্কেট এক্সেস ইন চাযনা ঃ হোয়াট নিডস টু বি ডান” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে আমরা চীনে রপ্তানি করেছি ৬৮০.৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে চীন থেকে আমদানি হয়েছে প্রায় ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। এ বিশাল বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনার জন্য আমরা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। চায়না আমাদের প্রায় ৯৮ ভাগ পণ্য রপ্তানির উপর ডিউটি ফ্রি সুবিধা প্রদান করছে। বাংলাদেশ আগামী ২০২৬ সাল থেকে এলডিসি গ্রাজুয়েশন করছে। বাংলাদেশ আশা করছে চীন আরও তিন বছর বাড়িয়ে আগামী ২০২৯ সাল পর্যন্ত এ বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখেবে। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর বাংলাদেশ বাণিজ্য সুবিধা পেতে বিভিন্ন দেশেল সাথে এফটিএ বা পিটিএ এর মতো বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে সুবিধা গ্রহণ করবে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চীনের সাথে এমওইউ স্বাক্ষর করেছে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে সম্ভ্যাব্যতা যাচাই চলছে। সবদিক বিবেচনায় নিয়েই চীনের সাথে আমাদের বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে।
সেমিনারে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চীনের অনেক বিনিয়োগ বাংলাদেশে আছে, এ বিনিয়োগ আরও বাড়াতে পারে।

বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক শিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তি রয়েছে। চায়না শিল্প কলকারখানা বাংলাদেশে রিলোকেট করে কম খবরচে পণ্য উৎপাদন করে অন্যদেশে রপ্তানি করতে পারে। বাংলাদেশের স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ তৈরী পোশাক এর পাশাপাশি পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, আইসিটি পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এ সকল সেক্টরের রপ্তানি বাড়ছে। এ সকল সেক্টরে রপ্তানি বৃদ্ধি পেলে দেশের রপ্তানি আয় যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি চীনের সাথে বাণিজ্য ব্যবধান কমে আসবে।

বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই) এর প্রেসিডেন্ট গাজী গোলাম মুরতজার সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের এ্যাম্বাসেডর লি জিমিং, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল আল মামুন মৃধা।

আনন্দবাজার/টি এস পি

সংবাদটি শেয়ার করুন