সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় পাহাড় ধসে মাটিচাপায় একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শিশুও রয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬ জন। গতকাল সোমবার ভোর ৫টার দিকে উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের পূর্ব সাতজনি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- পূর্ব সাতজনি গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে জুবায়ের আহমদ (৩৫), তার স্ত্রী মোছা. সুমি বেগম (২৬), জুবায়ের আহমদের ছেলে সাফি আহমদ (৫) এবং জুবায়ের আহমদের ভাই মাওলানা রফিক আহমদের স্ত্রী মোছা. শামীমআরা বেগম (৪৮)।
স্থানীয় ও থানাপুলিশ সূত্র জানায়, সাতজনি গ্রামে পাহাড় কেটে অনেকেই বাড়িঘর নির্মাণ করেছেন। এর মধ্যে ওই পরিবারও পাহাড় কেটে পাদদেশে বাড়ি তৈরি করে। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণের কারণে পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে পড়ে। রোববার রাতেও সিলেটে বৃষ্টি হয়। আর সোমবার ভোরর ৫টার দিকে পূর্ব সাতজনি গ্রামের জুবের আহমদের টিনের তৈরিঘরের উপর পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে। এসময় ঘুমন্ত অবস্থায়ই মাটিচাপা পড়ে একই পরিবারের ওই চারজন নিহত হন।
এ ঘটনায় আহত হন ৬ জন। তারা হলেন- আব্দুল করিম (৮০), খয়রুন নেছা (৭৫), মাওলানা রফিক আহমদ (৬০), ফাইজা বেগম (২০), লুৎফা বেগম (২০), রাফিউল ইসলাম (১০), মেহেরুন নেছা (৪০) ও হাম্মাদ (৩)। আহতদের পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া দেওয়া হয় এবং গ্রামের বাসিন্দারা দ্রুত ছুটে এসে হতাহতদের উদ্ধারকাজ শুরু করেন। অপরদিকে ঘটনার সংবাদ পেয়ে সিলেট ফায়ার সার্ভিস উপ পরিচালক মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে জালালাবাদ ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সদস্য ও জৈন্তাপুর থানাপুলিশের টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে। পরে আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সিলেট ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে দ্রুত দুটি ইউনিট নিয়ে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করি। ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জন নিহত হয়েছেন এবং ৮ জন আহত হয়েছেন।
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম দস্তগির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় ৫ জনকে আহতবস্থায় এবং ৪ জনকে মৃত উদ্ধার করা হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে ময়না তদন্ত ছাড়া বেলা আড়াইটার দিকে স্থানীয় চিকনাগুল শাহী ঈদগাহ ময়দানে জানাযার নামাজ শেষে নিহতদের লাশ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে, তাৎক্ষণিকভাবে নিহদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও শুকনো খাবার প্রদান করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিলেট অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান। এসময় তিনি হতাহতদের পরিবারকে মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা প্রদান করেন।