তথ্যের অভাবে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত: বিএসইসি কমিশনার
যখন শেয়ার কেনার সময়, তখন তারা (বিনিয়োগকারী) শেয়ার বিক্রি করে, বিক্রির সময় শেয়ার কিনে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। একই সঙ্গে বলেন, তথ্যের অভাবে বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ করতে পারছে না। গতকাল রবিবার রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সিএমজেএফের এই কর্মশালার আয়োজন করে। এতে সার্বিক সহযোগিতা করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। অনুষ্ঠানে শেষদিকে সিএমজেএফ ফ্যামিলি ডে ২০২২ এর র্যাফেল ড্রতে মোটরসাইকেল বিজয়ীদের মধ্যে চাবি হস্তান্তর করা হয়। এতে প্রথম পুরস্কার বিজয়ী হলেন আনন্দবাজারের রিপোর্টার মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান, দ্বিতীয় বিজয়ী দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম এবং তৃতীয় বিজয়ী ইকোনোমিক রিপোটার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি শারমীন রিনভী। মোটরসাইকেল তিনটি স্পন্সর করেছে ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ, ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট ও ইউসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনার সময় লাভ করতে হয় উল্লেখ করে শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রি করে আসলে লাভ হয় না। যা লাভ শেয়ার কেনার সময় করতে হয়। শেয়ার দর কমে কিনলে লাভ আসবে। বেশি দামে নয়। তাই সঠিক সময়ে শেয়ার কিনতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে অদ্ভুত গুজবে বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন। যখন কেনার সময়, তখন তারা শেয়ার বিক্রি করে। বিক্রির সময় শেয়ার তারা কিনছে।
আমাদের মার্কেট ও ইকোনমির ওপর ভিক্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হয় জানিয়ে শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের মার্কেটের দেখা যায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি বেশি, আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী কম। এই মার্কেটে ট্রেডার ভার্সেস ইনভেস্টর যে সাদৃশ্য থাকা দরকার সেই সাদৃশ্য নেই। আমাদের চেষ্টা হচ্ছে, উভয় পক্ষের মধ্যে ভারসাম্য রাখা।
তথ্যের অভাবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেক সময় বিনিয়োগকারীরা তথ্য বিশ্লেষণে বিনিয়োগ করতে চাই। কিন্তু নির্ভরযোগ্য তথ্যের অভাবে বিনিয়োগ করতে পারেন না। বেশকিছু কোম্পানি ওয়েবসাইটে হালনাগাদ তথ্য থাকে না। এসব বিষয় সমাধানে গত ২ বছর অনেক চিঠি দিয়েও সম্ভব হয়নি।
শেখ শামসুদ্দিন আরও বলেন, যদি একটি কোম্পানির নিরীক্ষিত হিসাব না পাওয়া যায়, তাহলে একজন বিনিয়োগকারী ওই কোম্পানি সম্পর্কে কিভাবে জানবেন। ওই কোম্পানির কি আছে, কি নেই, ব্যবসায়িক অবস্থা সম্পর্কে জানতে আর্থিক হিসাবের প্রয়োজন। অন্যথায় একজন বিনিয়োগকারীর লোকসানের সম্ভাবনা থাকে। তাই আমরা সব কোম্পানিকে ওয়েবসাইটে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশের অনুরোধ করছি। এ বিযয়ে আমরা কঠোর হয়ে কাউকে শাস্তি দিতে চাই না। তবে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো আইনি সক্ষমতা আমাদের আছে।
সিএমজেএফের সভাপতি জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান বক্তব্য রাখেন ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজের সিইও রহমত পাশা, ইউসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেনন্টের সিইও রাশেদ হাসান , ইউসিবি ইনভেস্টমেন্টের সিইও তানজিম আলমগীর, সিএমজেএফের সাবেক সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল ও ইআরএফরের সভাপতি শারমীন রিনভী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলী। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসইর ডিজিএম সাইয়িদ মাহমুদ জুবায়ের ও মার্কেট ডেভেলেপমেন্ট বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার সৈয়দ ফয়সাল আব্দল্লাহ।
আনন্দবাজার/শহক