গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার খামারি ও কৃষকরা। এতে উপজেলার কয়েক হাজার খামারি তাদের গবাদিপশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। পর্যাপ্ত খাবারের যোগান দিতে না পেরে কেউ কেউ আবার গবাদিপশুই বিক্রি করে দিচ্ছেন। খামারিরা বলছেন- গো-খাদ্যের দাম বাড়লেও বাড়ছে না দুধের দাম। খাবারের সঙ্গে দুধের দামের সামঞ্জস্য না থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। পশুদের পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দু সপ্তাহে ব্যবধানে গো-খাদ্যের নারিশ ফিড প্রতি কেজি ২৫ টাকা,আগে ছিল ২২ টাকা। ভূসি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬২ টাকা, আগে ছিল ৫৪ টাকা। খুদি ও খৈল বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ৪৫ টাকা। প্রতি কেজি চালের খুদি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, আগে ছিল ৩৫ টাকা। আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি, আগে ছিল ৩৮-৪০ টাকা। এছাড়া ভুট্টার আটা বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ৩৫ টাকা। খামারি ও কৃষকরা বলছেন, সংসারে সচ্ছলতা আনতে ও পরিবারের দুধের চাহিদা মেটাতে গবাদিপশু লালনপালন করেন তারা। খড় ও ঘাসের পাশাপাশি দানাদার খাবার হিসেবে ভুসি, খৈল, আটা ও ফিড দেওয়া হয়।
গত দু সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫-১০ টাকা। দফায় দফায় দাম বেড়েই চলেছে। খাবার জোগান দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। খাবারের দাম বাড়ায় দুধ উৎপাদন ও গরু মোটাতাজাকরণ ব্যাহত হচ্ছে। এভাবে পশুখাদ্যের দাম বাড়তে থাকলে খামার বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া তাদের কোনো উপায় থাকবে না। খামারিরা বলেন, দেশি-বিদেশি গরু মোটাতাজা করণ তারা। ৪৫ টাকা কেজির খৈল এখন ৫০-৫২ টাকায় কিনতে হচ্ছে। পশু খাবারের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে আমাদের মতো ছোট খামারিদের পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব না। গরু পালন বাদ দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না তারা। খাবারের দাম যেভাবে বাড়ছে তেমনি গরুর দাম বাড়ছে না।
তারা আরও বলেন, পশুখাদ্যের দাম কমানো নিয়ে সরকারের তেমন কোনো উদ্যোগ দেখছি না। প্রান্তিক খামারিদের রক্ষা করতে দ্রুত সরকারি নজরদারি বাড়ানো দরকার। খাবারের দাম বেড়ে গেলে পশুর দামও বেড়ে যাবে। মাংসের দামও বৃদ্ধি পাবে। এতে করে অনেকের পক্ষে গরুর মাংস কিনে খাওয়া সম্ভব হবে না। নিয়ামতপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইয়ামিন আলী বলেন, প্রতিটি দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার পাশাপাশি গো-খাদ্যের দামও বেড়েছে। এতে প্রান্তিক খামারি ও কৃষকরা অনেকটা বিপাকে পড়েছেন। খামারিরা এসে অভিযোগও করছেন, খাদ্যের দাম বাড়ায় লাভ না হয়ে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। খামারিদের বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।