বর্তমান বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে উচ্চ রক্তচাপ। সারা বিশ্বে ১৫০ কোটির বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপের শিকার। প্রতি বছর ১৭ মে পালন করা হয় বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস। এই দিনটি পালনের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে, কার্জিওভাসকুলার রোগ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো। হাইপারটেনশন হচ্ছে হাই ব্লাড প্রেসার। সারা বিশ্বে কার্ডিওভাসকুলার রোগের অন্যতম প্রধান ও সাধারণ কারণ হল উচ্চ রক্তচাপ।
উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, বেশি লবণ গ্রহণ, অতিরিক্ত মেদ, কাজের চাপ, মদ্যপান, পরিবারের আকার, অতিরিক্ত আওয়াজ ও ঘিঞ্জি পরিবেশে থাকা।
উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েটে যেসব খাবার তালিকাভুক্ত করবেন, সেগুলো জেনে নিন-
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বিভিন্ন ফল যেমন- জাম্বুরা, কমলা ও লেবু ইত্যাদি ফলগুলো উচ্চ রক্তচাপ কমাতে শক্তিশালী হিসেবে কাজ করতে পারে। এগুলো ভিটামিন, খনিজ ও উদ্ভিদের যৌগ দ্বারা পরিপূর্ণ যা উচ্চ রক্তচাপের কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে এবং আপনার হার্টকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
কলা
সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে কলায়। তবে পটাসিয়াম, ফাইবার ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ থাকায় রক্তচাপ কম রাখে ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ব্রেকফাস্টে ফলের মত করে খেতে পারেন কলা। আবার স্মুদি অথবা মিল্কশেক হিসেবেও খেতে পারেন। এতে হজমশক্তিও বাড়ে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে।
কমলালেবু
কমলালেবুতে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। রক্তচাপ কমাতে এই ফলের বিকল্প নেই। হার্টকে সুস্থ রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর ফাইবার এবং ভিটামিন সি থাকে এতে। সকালের ব্রেক ফাস্টে অথবা টিফিন ব্রেকে কমলালেবুর রস খেতে পারেন।
বেদানা
বেদানায় রয়েছে এসিই। যা এনজাইম কমাতে সাহায্য করে। এতে রক্তনালীর আকার নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তচাপ কমায়।
আম
আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, বিটা বিটা ক্যারোটিন ও পটাসিয়ামের একটি বড় উৎস। যা রক্তচাপ কমাতে কার্যকর হয়।
কুমড়া বীজ
পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ কুমড়া বীজ। এতে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির একটি ঘনীভূত উৎস যেমন- ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও আর্জিনিন থাকে। এ
চর্বিযুক্ত মাছ
বিভিন্ন চর্বিযুক্ত মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের অনেক ভালো উৎস। এটি হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এই চর্বিগুলো উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা কমানো ছাড়াও প্রদাহ কমাতে ও অক্সিলিপিনস নামক রক্তবাহী যৌগের মাত্রা হ্রাস করে।
চিয়া বীজ
চিয়া বীজে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য অপরিহার্য পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফাইবার প্রচুর পরিমাণে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, চিয়া বীজ রক্তচাপ কমায় এবং এটি ১২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে খেলে তা আরও বেশি উপকার করে।
তুলসি পাতা
নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে যদি তুলসি পাতার রসের সাথে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে রক্ত চাপ স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসতে সময় লাগে না।
পেঁয়াজের রস
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার পাশাপাশি যদি পেঁয়াজের রস খেতে পারেন, তাহলে দেহের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে খেতে হবে পেঁয়াজের রস? সেক্ষেত্রে ১ চামচ পেঁয়াজের রসের সাথে সমপরিমাণে মধু মিশিয়ে খাওয়া শুরু করতে হবে।
তরমুজ
রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তরমুজ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তরমুজের ভিতরে উপস্থিত ফাইবার, ভিটামিন এ, পটাসিয়াম ও লাইকোপেন, রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আনন্দবাজার/টি এস পি