- যেন এক টুকরো বিনোদন কেন্দ্র
মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ। বছরে দুটি ঈদ বয়ে আনে বিশেষ কিছু, বিশেষ আনন্দ। সারাবছর ধরে বিশ্বের সকল মুসলিম জাতি অপেক্ষায় থাকে ঈদ উৎসবের। প্রস্তুতি চলে বছরজুড়ে। তবে অতীতের মতো জাঁকজমকপূর্ণ ঈদ আয়োজন এখন আর চোখে পড়ে না। তবে বাঙালির ঈদ একটু হলেও ব্যতিক্রম। এ উৎসব শুধু মুসলমানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র বাঙালি জাতি যোগ দেয় এ উৎসব আনন্দে। এ বৈশিষ্ট্যই বাঙালির ঈদকে মহিমান্বিত করে তোলে।
এ ঈদে এমনটা আয়োজনের কিছু ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা। প্রতি বছর ন্যায় পুরান ঢাকাবাসির ঈদের ৭ দিন পর্যন্ত আনন্দ চলমান থাকে। এমনিতেই বিগত বছর যাবৎ কোভিড-১৯ এর কারণে ঈদের আনন্দে অনেকটা ভাটা পড়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে ঈদের আনন্দ পুরোপুরি গৃহবন্দী অবস্থায় ঈদ পালন করেছে।
এবারের ঈদুল ফিতর আনন্দের চাহিদা পুরোপরি পূরণ করে চোখে পড়ার মত এক ব্যতিক্রম আয়োজন ছিল ঐতিহ্যবাহী বংশালের।
পুরো বংশাল এলাকাটি আলোকসজ্জা দিয়ে সজ্জিত করা হয়। ঐতিহ্যবাহী বংশাল পুকুরের রাতের দৃশ্য আলোর ফুয়ারায় দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। তার সঙ্গে পুকুরের নৌকা ভ্রমণের সুব্যবস্থা করা হয়েছিল। নৌকাগুলোর সাজ-সজ্জায় ছিল মোগল রাজকীয়তার ছাঁপ। শিশু-যুবক-যুবতী-বৃদ্ধরা পর্যন্ত নৌকা ভ্রমণের আনন্দ উপভোগ করেন। শিশুদের বিনোদনের সার্বিক আয়োজনে এক বিশাল মিলন মেলায় মন চায় যেন শিশুদের মতো আবারো ফিরে যেতে চাই ঈদের দিনের স্বপ্নীল শৈশবে।
ঐতিহ্যগত দিক থেকে আরেকটি আয়োজন ছিল অতুলনীয় ‘ঈদ আনন্দ মেলা’। পুরান ঢাকার বংশালের ফ্রেঞ্চ রোড নয়াবাজারে ঈদের দিন থেকে শনিবার পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী চলছে আনন্দ মেলা। মেলায় সান্তা মারিয়া নৌকা, নাগরদোলা, ইলেকট্রিক হর্স রাইড, চরকি, ট্রেন, ঘোড়া গাড়ি, জাম্পিং প্যাড, ফোর হর্স রাইড, শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের জন্য বিভিন্ন রাইডের আয়োজিন ছিল। পুতুল নাচ, ঐতিহ্যবাহী নৌকা ভ্রমণ ও খেলনার বিভিন্ন পশরাসহ খাবারের স্টল। এছাড়া প্রতি দিনের আতশবাজি, সারফি লেজার, আকর্ষণীয় লেজার আলোক সজ্জা রয়েছে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বাড়ায়। স্থানীয়সহ আশপাশের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছে এই আনন্দ মেলা দেখতে।
ঈদ আনন্দ মেলাটির আয়োজন করে ৩৫ নং ওয়ার্ড, মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক ও ঐতিহ্যবাহী মিল্লাত উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এস আই ফারিয়াদ।
তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকায় বিনোদনের তেমন জায়গা নেই। সে জন্য ঈদে যেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা কিছুটা হলেও বিনোদনের সুযোগ পায় তাই এই মেলার আয়োজন। তবে সামনের ঈদগুলোতে আরও সুন্দরভাবে ঢাকাবাসীকে আনন্দ উপহার দেওয়ার জন্য মেলাটির আয়োজন করবো।
ঈদের ৫ দিন এ বর্ণাঢ্য আয়োজন ঈদের দিন শুরু হয়ে শনিবার (৭ মে) রাতে শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ এর সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া মেলায় উপস্থিত থেকে এ আয়োজন উপভোগ করেন।
সমাপনিতে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ এর সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া বলেন:- কর্মব্যস্ত নগর জীবন এমেলা আমাদের গ্রামীণ পরিবেশের সঙ্গে ঢাকাইয়াদের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করেছে। অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রহমান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাজী মো. ঈসমাইল, বংশাল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফাসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।