বাংলাদেশ থেকে মোট রফতানির ৮৪ শতাংশ আয় হয় পোশাক শিল্পের মাধ্যমে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বা অটোমেশনের ফলে হুমকির মুখে পড়বে পোশাক শ্রমিকরা। কর্মক্ষেত্রে বাড়বে মেশিনের গুরুত্ব, কমবে ব্যক্তির প্রয়োজনীয়তা। ২০৪১ সালের মধ্যে শুধু তৈরি পোশাক খাতেই মোট কর্মসংস্থানের ৬০ শতাংশই চলে যাবে মেশিন বা রোবটের দখলে। প্রথাগত কর্মসংস্থানের অনেক পদই বিলুপ্ত হয়ে পড়বে বলে এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন বিশ্লেষকরা।
‘ফিউচার স্কিলস রিকোয়ার্ড ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরার পর মূল প্রবন্ধে গবেষণা তথ্য তুলে ধরেন রেজাউল করিম। বাংলাদেশের পাঁচ কর্মক্ষেত্রে অটোমেশনের প্রভাব তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। তৈরি পোশাক, কৃষি ও খাদ্য, ফার্নিচার, পর্যটন ও হসপিটালিটি, চামড়া ও পাদুকাশিল্পে কর্মসংস্থানের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়। গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সেমিনারটির আয়োজন করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব হবে রোবট, অটোমেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার। ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স) নেতৃত্ব যাবে এশিয়ার দেশগুলো থেকেই। বর্তমানে প্রতি বছর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে ১২ শতাংশ হারে। খুব দ্রুতই এ প্রবৃদ্ধি নজিরবিহীনভাবে বৃদ্ধি পাবে।
অটোমেশনের কারণে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে শ্রমঘন শিল্পে। প্রচলিত কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রগুলো ক্রমেই অটোমেশনের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। এতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অনেক পদই বিলুপ্ত বা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে। উৎপাদন ও সেবা খাতে অটোমেশনের হার সবচেয়ে বেশি হবে। আগের তুলনায় বেশি হারে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে। আবার আইটির ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে নতুন কিছু চাকরিক্ষেত্রও তৈরি হবে। এজন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র বের করতে হবে।
ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসির বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে সরকারের ব্যাপক উদ্যোগ প্রয়োজন। চতুর্থ শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী জনবল তৈরিতে শিক্ষা খাতে সংস্কার আনা সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়ভিত্তিক ও কারিগরি শিক্ষাকে সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
আনন্দবাজার/ইউএসএস
আনন্দবাজার/ইউএসএস