নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর ধু ধু বালুচরের দিগন্ত জোড়া মাঠে চাষ করা হয়েছে বাদাম। বাদাম চাষে চাঙ্গা চরাঞ্চলের অর্থনীতি। কঠোর পরিশ্রম করে বালুচরে স্বপ্ন বুনছেন চরাঞ্চলের চাষিরা। শুধু চরাঞ্চলেই নয় তুলনামূলক উঁচু জমিতেও বাদাম চাষ করেছেন চাষিরা। কম খরচের ফসলের মধ্যে বাদাম অন্যতম। এক বিঘায় লাভ হয় খরচের চারগুণ।
সরেজমিনে দেখা যায়, অধিক লাভের আশায় তিস্তার চরে বাদাম চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। চরের বাদাম চাষিরা জানান, একবিঘা জমিতে বাদাম চাষ ও তোলা বাবদ খরচ সর্বোচ্চ চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় আট মণ ফলন পাওয়া যায়। তিন হাজার টাকা হিসাবে এর দাম ২৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ বিঘায় লাভ ১৮ থেকে ১৯ হাজার টাকা। অথচ বোরো আবাদে বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ করে এ বছর ৮ থেকে ৯ হাজার টাকার ধান পাওয়া যায়।
বর্তমানে চলছে নিড়ানি আর সেচ কাজ। ক্ষেতে সেচ দেয়াটা খুব কষ্টকর চরাঞ্চলের চাষিদের। শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি তুলে পলিথিন পাইপ দিয়ে পানি দিতে হয় ক্ষেতে।
চাষিরা জানান, তিস্তার দুই তীরে সেচ সুবিধা পেলে চরাঞ্চলে সবুজের বিপ্লব ঘটানো সম্ভব। তাই নদীটি শাসন করে গতিপথ নির্ধারণ করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করার দাবি তাদের অনেকদিনের।
চর খড়িবাড়ি গ্রামের চাষি বেলাল ইসলাম বলেন, অধিক লাভের আশায় প্রায় এক একর জমিতে বাদামের চাষ করেছি। তবে এবার বাদামের বীজ চড়া দামে কিনতে হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো বাদামের অধিক ফলনে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবো।
চাষি বাছেদ আলী বলেন, অনেক টাকা ব্যয়ে বাদামের বীজ কিনে জমিতে বপন করেছি। যদি সরকার আমাদের বীজ ও সার দিয়ে সাহায্য করে তাহলে আরও বেশি লাভবান হতাম।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী জানান, পলি জমে থাকার ফলে চরের জমি অনেক উর্বর। যার কারণে যে কোনো প্রকার ফসলের ফলন ভালো হয়। চরের জমিগুলো ভুট্টা ও বাদাম চাষের জন্য বেশ উপযোগী। বাদামের বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই ও তার প্রতিকার সম্পর্কে জানাচ্ছি। আশা করি এবার অধিক ফলন হবে এবং চাষিরা অনেক লাভবান হবে।