ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১ হাজার ১শ’ ৩ কোটি টাকা চায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়

পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ এবং পাট কেনার অর্থ পেতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের শরণাপন্ন হয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। এ শরণাপন্নে সর্বমোট ১ হাজার ১শ’ ৩ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। অর্থ পেলে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করাসহ নতুন পাট কেনা সম্ভব হবে বলে।

বিজেএমসির পাটকলগুলোর পাটের বকেয়া, কমচারী ও কর্মকর্তাদের মজুরি, বেতন-ভাতা বকেয়া থাকায় বর্তমানে পাট ব্যবসায়ীরা শ্রমিক কর্মচারীরা দাবিদাওয়া বাস্তবায়নের জন্য ঘেরাও, অবরোধ, কর্মবিরতির কর্মসূচি পালন করছেন। যার  ফলে এ খাতে চরম অশান্তি  আকার ধারণ করেছে।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূত্রে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বকেয়া পরিশোধ ও নতুন পাট ক্রয়ের জন্য ১ হাজার ১শ’ ৩ কোটি টাকা অর্থমন্ত্রণালয়ে চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মৌসুমি পাট ক্রয়ের জন্য ১ হাজার কোটি টাকা এবং শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বকেয়া মজুরি ও বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ১শ’ ৩ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান জানান, বিজেএমসির বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে এক জরুরি সভায় শ্রমিক, কর্মচারীদের বকেয়া মজুরি, বেতন-ভাতা, পাট ক্রয় এবং পাট ব্যবসায়ীদের বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য অর্থ বিভাগে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে পত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে গত ৫ মে থেকে উৎপাদন বন্ধ রেখে আন্দোলন করে। এরপর পাটকল শ্রমিক লীগ এবং সিবিএ ও সিবিএবহির্ভূত (নন-সিবিএ) নেতাদের আহ্বানে ১৩ মে থেকে সারাদেশে এই আন্দোলনর ছড়িয়ে পড়ে ।

বিজেএমসির অধীনে ২৬টি পাটকলের মধ্যে ২৫টি বর্তমানে চালু আছে। এর মধ্যে ২২টি পাটকল ও ৩টি ননজুট কারখানা। পাটকলগুলোতে গত বছরের জুন পর্যন্ত ২৭ হাজার ৭২১ জন স্থায়ী শ্রমিক এবং ৩ হাজার ৭৩০ জন কর্মচারী ও কর্মকর্তা ছিলেন। এছাড়া তালিকাভুক্ত ২৩ হাজার ২৭৮ জন বদলি শ্রমিক ও ৬ হাজার ৫৪৮ জন দৈনিকভিত্তিক শ্রমিক কাজ করেন।

বিজেএমসি জানায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের পাটকলগুলো জুলাই থেকে ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত আট মাসেই লোকসান হয়েছে ৩৯৫ কোটি টাকা। এছাড়াও  গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪৬৬ কোটি টাকার লোকসান গুনতে হয়েছে। তবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পাট ও পাটপণ্য রপ্তানি ও স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে  ১ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা আয় করে পাটকলগুলো।

বিজিএমসি সূত্র জানায়,  প্রতি বছরই পাটের মৌসুমে কাঁচাপাট কিনতে ও শ্রমিকের বেতন-ভাতা দিতে অর্থমন্ত্রণালয়ের শরণাপন্ন হতে হয় বিজেএমসিকে। গত এক দশকে আর্থিক সংকট কাটাতে করপোরেশনকে ৭ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার।

সরকারি পাটকলে লোকসানের বড় কারণ কাঁচা পাট কেনায় অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির করণে পাট কেনে দেরিতে ও বেশি দামে।  সরকারি পাটকলের উৎপাদনশীলতা কম, উৎপাদন খরচ বেশি, যন্ত্রপাতি পুরানো এবং বেসরকারি খাতের তুলনায় শ্রমিকের মজুরি বেশি। লোকসান ও অব্যবস্থাপনার কারণে শ্রমিকদের মজুরি দিতে পারে না পাটকলগুলো।

 

আনন্দবাজার/এম.কে

সংবাদটি শেয়ার করুন