ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিজেলের বৈশ্বিক সংকটে চড়া হচ্ছে জ্বালানি তেলের বাজার

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রকট হচ্ছে ডিজেল সংকট। এতে পেট্রোলিয়ামের বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী চাপের মধ্যে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করা না গেলে ২০০৮ সালের মতো ভয়ানক অবস্থা তৈরি হতে পারে। ওই বছরটিতে জ্বালানি পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধি অতীতের যেকোনো সময়কে ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ইআইএ) দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ডিজেলসহ চোলাই করা জ্বালানি তেলের মজুদ ২০ লাখ ব্যারেল কমেছে। ১১ কোটি ২০ লাখ ব্যারেলে দাঁড়িয়েছে মজুদের পরিমাণ।

উইকলি পেট্রোলিয়াম স্ট্যাটাস রিপোর্টে সংস্থাটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে গত ৭৯ সপ্তাহের মধ্যে ৫২ সপ্তাহেই চোলাই করা জ্বালানি তেলের মজুদ কমেছে। এই সময় সব মিলিয়ে ৬ কোটি ৭০ লাখ টন তেলের ঘাটতি তৈরি হয়। ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের পর মজুদে এমন নিম্নমুখিতা দেখা যায়নি।

বর্তমানে জ্বালানি পণ্যের বাজারে যে সংকট চলছে তার মধ্যে সবচেয়ে সংকোচনের মধ্যে রয়েছে, চোলাই করা জ্বালানি তেল। পণ্যটির মজুদ যুক্তরাষ্ট্রে মহামারীপূর্ব পাঁচ বছরের গড়ের তুলনায় ২০ শতাংশ নিচে অবস্থান করছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ঘাটতি ১১ এবং গ্যাসোলিনের ঘাটতি ১ শতাংশে পৌঁছেছে।

বাজারে চলমান সংকট মোকাবেলা করতে না পারলে চলতি বছরের মাঝামাঝিতে মজুদ ১০ কোটি ৪০ লাখ টন কমার আশঙ্কা রয়েছে। এতে বাজারে ২০০৮ সালের মতো অস্থিতিশীলতা প্রকট আকার ধারণ করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও পুরো বিশ্বেই একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চোলাই করা জ্বালানি তেলের ভয়াবহ সংকট চলছে ইউরোপ এবং এশিয়ার বাজারে। কারণ মহামারীর ধাক্কা সামলে ওঠার পরই এসব অঞ্চলে জ্বালানি চাহিদা এবং ব্যবহার বেড়েছে কয়েক গুণ। অপরিশোধিত জ্বালানি তেল এবং ডিজেলের উৎপাদনকে ছাড়িয়ে গেছে চাহিদা।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস শেষে ইউরোপে চোলাই করা জ্বালানি তেলের মজুদ প্রায় ২০০৮ সালের মতো সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। ২০০৬ সালের পরবর্তী সর্বনিম্নে অবস্থান করছে সিঙ্গাপুরে বর্তমানের মজুদ। মাঝামাঝি পর্যায়ের চোলাই করা জ্বালানি তেল, যেমন ডিজেল এবং গ্যাস অয়েল সাধারণত পণ্যবাহী পরিবহন, শিল্প উৎপাদন, খামার, খনিজ উত্তোলন এবং তেল-গ্যাস নিষ্কাশনে ব্যবহার করা হয়। ফলে এটি জ্বালানি তেল শিল্পে সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীল পণ্য।

তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালে চোলাই করা জ্বালানি তেলের দাম অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে সহায়তা করে। পণ্যটির দাম বিশ্ব অর্থনীতিকে ভয়াবহ মূল্যস্ফীতির ঝুঁকির মধ্যে ফেলে। ওই বছর প্রতি ব্যারেল দাম ১৮৭ ডলারে উন্নীত হয়।

আনন্দবাজার/টি এস পি

সংবাদটি শেয়ার করুন