মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে আলুর সাথী ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে আখ। এক ফসলি জমিগুলিতে এভাবে চাষাবাদ করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক। নিম্নাঞ্চল হওয়ায় বছরের জৈষ্ঠ মাসেই জমিতে ফসলি জমিতে জোয়ারের পানি ডুকে পড়ে। একসময় বর্ষাকালে এসব জমিতে আমন ধানের চাষবাদ হতো। এখন আর আমনের চাষ করতে চোখে পড়েনা। আখ লাভজনক চাষ হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা আলু উৎপাদনের পাশাপাশি বীরতারা ও আটপাড়ায় অধিকাংশ জমিতে আখ চাষ করতে দেখা যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে আটপাড়া, বীরতারা, কুকুটিয়া ও তন্তর ইউনিয়নের আলুর চাষ বেশি হচ্ছে। চলতি মাসের শেষের দিকেই আলু উত্তোলণ শুরু হবে। লক্ষ্য করা যায়, বীরতারা ও আটপাড়া এলাকার চকে প্রায় আলুর জমিতে আখের চারারোপণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে জমিতে আখের চারা ৩ ফুট পরিমান বড় হয়েছে। এ সময় বীরতারা এলাকায় আলু জমিতে পানি দেখা যায়। দিপু ও স্বপন নামে দুই শ্রমিক জানায়, ১২০ টাকায় প্রতিগন্ড (৭ শতাংশ) জমিতে পানি দিচ্ছেন তারা। এতে আলুর সাইজ ভালো হবে। অপরদিকে রোপণকৃত আখের চারাগুলো দ্রুত বাড়বে।
কৃষক জাহাঙ্গীর, হাসান, জয়নাল শেখ, আমিনুলসহ স্থানীয় কৃষকরা বলেন, এক জমিতে আলুর সঙ্গে আখের চাষ করছি। কিছুদিন পরে আলু উঠে গেলে জমিতে আখের পরিচর্যা শুরু হবে। বৃষ্টি না থাকায় আলু মৌসুমের শেষমূহুর্তে জমিতে পানি দিতে হচ্ছে। এতে কিছুটা হলেও আলু ও আখের জন্য উপকার হবে। তারা জানান, এবার আলু মৌসুমের প্রথম দিকেই অসময়ের টানা বৃষ্টির কারণে আলুবীজ বপনকৃত জমি নষ্ট হয়। পুনরায় জমিতে আলুবীজ বপন করতে বিড়ম্বনায় পড়েন। আলু চাষে এবারও লোকসানের শঙ্কা করছেন। তাই এক ফসলি এসব জমিতে আখ চাষে লোকসানের কিছুটা কাটিয়ে উঠার স্বপ্ন দেখছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসার শান্তনা রানী জানান, উপজেলায় চলতি বছর ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যেই আলু উত্তোলন করা হবে। আখ চাষ লাভজনক হওয়ায় ধারনা করা হচ্ছে প্রায় ২০০ হেক্টর আলু জমিতে আখের চারা রোপন করা হয়েছে। এ অঞ্চলে আখ চাষে সরকারিভাবে কোনো সাহায্য সহযোগীতা আসে না। তবে আখের রোগ-বালাই ও অধিক ফলনের জন্য কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।