ঢাকা | রবিবার
১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২৮শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মরুর ত্বিন এখন সখীপুরে

মরুর ত্বিন এখন সখীপুরে

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কীর্তনখোলা গ্রামে ত্বিন চাষে সফল জাবিদ আল মামুন। ২০১৮ সালে করটিয়া সরকারি সাদত কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স পাশ করেন। বেকার জীবন পার করছিলেন, সেই সঙ্গে চাকরির চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। এর মধ্যে ২০২০ সালে করোনার থাবা। ঘরে বসে দিন পার করছেন জাবিদ। ইউটিউব থেকে জানতে পান কুরআনে বর্ণিত ত্বিন ফল চাষ হচ্ছে বাংলাদেশে।

করোনাকালে ঘরে বসে আছেন, বেকর বসে না থেকে কী করা যায় এমন ভাবনা যখন তার মাথায় ঘুরছে, তখন ত্বিন চাষ করা সম্ভব কিনা জানতে চেষ্টা করেন? এর পর তিনি খোঁজ নিতে থাকেন বাংলাদেশে কোথায় ত্বিন ফল চাষ হচ্ছে। পরে জানতে পারেন গাজীপুরে চাষ হচ্ছে ত্বিন।

এরপর ত্বিন ফলের বিষয়ে কর্মশালায় যোগদান করেন গাজীপুরের শ্রীপুরে। প্রশিক্ষণ শেষ করে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ৬০০ চারা কিনে বাড়ির পাশে ৩৫ শতাংশ জমিতে রোপন করেন। প্রতিটি চারা কিনতে খরচ হয়েছে ৫২০ টাকা।

জাবিদের ত্বিন বাগানের ছোট বড় সব গাছেই ত্বিন ফল ধরেছে। অনেক গাছেই ত্বিন ফল পাকতে শুরু করছে। প্রথমবারের মতো ত্বিন গাছে ফল আসতে শুরু হওয়ায় দৃষ্টি কেড়েছে স্থানীয়দের। এ ফল চাষ করে উপজেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি।

জাবিদ আল মামুন জানান, প্রথমে কিছুটা শঙ্কায় ছিলাম। পরে কঠোর পরিশ্রম, নিবিড় পরিচর্যা আর কৃষি অফিসের লোকজনের পরামর্শে সফল হয়েছি। দুই মাসের মধ্যে গাছে ফল আসতে শুরু করে। ৬ মাসের মধ্যে ফল বিক্রি শুরু করি। চলতি বছর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে ত্বিন ফল পাকতে শুরু করে। প্রতিকেজি ত্বিন বিক্রি করা হয় ৮শ’-১ হাজার টাকা করে।

চলতি বছর প্রতিটি থেকে ৩ থেকে ৪ কেজি ফল পাবেন বলে আশা করছেন। দ্বিতীয় বছরে প্রতিটি গাছে ফলন হবে ৭ থেকে ১০ কেজি ফল আসবে। তিন বছর পর থেকে এককেকটি গাছ থেকে পাওয়া যাবে ২০ থেকে ২৫ কেজি ত্বিন। টানা ৩৫ বছর পর্যন্ত ফল দিতে পারে একটি ত্বিন গাছ। আকারে দেশীয় ডুমুর গুলোর চেয়ে বেশ বড় হয়। পাকলে বেড়ে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হয়।

উপজেলা কৃষি অফিসার নিয়ন্তা বর্মন বলেন, মালটা, কলা, কুলসহ অন্যান্য ফসল ও ফল চাষের সঙ্গে এ উপজেলায় ত্বিন চাষ নতুন যুক্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা জাবিদকে ত্বিন ফল চাষে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। তাকে দেখে অনেক কৃষক আগ্রহী হচ্ছেন। আশা করছি সে ভালো ফলন পাবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন