পানিশূন্য গজনার বিল-–
বিল জুড়ে মাছ চাষের বদলে শোভা পাচ্ছে শুধুই পেঁয়াজ
পাবনার সুজানগরে এক সময়ের স্রোতস্বিনী গাজনার বিলে চলতি শুষ্ক মৌসুমে প্রায় শুকিয়ে গেছে। যার কারণে বিলে এখন আর তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বিলে এখন মাছ পাওয়া না গেলেও বিলের অধিকাংশ জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছেন চাষিরা।
সুজানগর উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, সরকারি এবং ব্যক্তি মালিকানা মিলে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমি নিয়ে গড়ে উঠা এ বিলে একসময় সারাবছর পানি আর পানি থৈথৈ করতো। তখন উপজেলার মৎস্যজীবীরা বিলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তবে কালের আবর্তনে বর্তমানে বিলটিতে আর সারাবছর পানি থাকে না।
বছরের ৬ মাস পানি থাকলেও আর ৬ মাস শুকনো থাকে। চলতি শুষ্ক মৌসুমে বিলের খাল ছাড়া বেশিরভাগ এলাকা শুকিয়ে গেছে। এতে বিলপাড়ের কৃষকেরা থেমে নেই জীবিকার তাগিদে বিলের অধিকাংশ জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। বর্তমানে বিল জুড়ে মাছ চাষের পরিবর্তে শোভা পাচ্ছে শুধু পেঁয়াজ আর পেঁয়াজ।
বিল পাড়ের দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান বলেন, গাজনার বিলে কখনও ফসল আবাদ করা যাবে একথা ভাবতেই পারি নাই। কেননা বেশিদিন আগের কথা নয়, প্রচন্ড স্রোতস্বিনী গাজনার বিলের বিশাল ঢেউয়ের তোড়ে বিল পাড়ের মানুষের বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে বিলে বিলীন হয়ে গেছে।
মানুষ অনেক সময় ভয়ে খেয়া নৌকায় বিল পার দিয়ে কোথাও যাওয়ার সাহস পায়নি। আর মাছের কথাতো বলেই শেষ করা যাবেনা। বিলে মাছ আর পানি ছিল প্রায় সমান। অথচ কালের আবর্তনে আজ সেই স্রোতস্বিনী গাজনার বিল শুকিয়ে যাওয়ায় সেখানে পেঁয়াজ ও ধানসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ হচ্ছে। শুধু তাইনা গাজনার বিলে পেঁয়াজ ও ধান আবাদ করে অনেক কৃষক স্বাবলম্বী হয়েছেন বলেও তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফিউল ইসলাম বলেন, চলতি শুষ্ক মৌসুমে বিলে মাছ পাওয়া না গেলেও বিলের জমিতে আবাদ করা পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু কিছু জমির পেঁয়াজ তোলা শুরু হয়েছে। আর ১০ থেকে ১৫দিনের মধ্যে পুরোদমে শুরু হবে। আশা করছি গাজনার বিলের পেঁয়াজে কৃষকের ভাগ্য বদলে যাবে।