ঢাকা | শুক্রবার
৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেশি লাভে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে

বেশি লাভে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে

কৃষি অর্থনীতিনির্ভর জেলা নীলফামারী। এ জেলার উর্বর দো-আঁশ, বেলে দো-আঁশ মাটিতে ধান, গম, সরিষা, পাট, কমলা, মালটা, আপেলকুল, চা, আম, লিচু, ড্রাগন, আদা বাদেও বিভিন্ন শাক সবজি আবাদ হয়ে থাকে। এসব ছাড়াও আবাদ হচ্ছে ভুট্টা। কৃষকরা ঝুঁকে পড়েছে লাভজনক পুষ্টি সমৃদ্ধ ফসল ভুট্টা আবাদে। এ ফসল কৃষি অর্থনীতিতে এক নতুন মাত্রাযোগ হয়েছে।

নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে, গত বছর ২৩ হাজার ৪৫ হেক্টরে ভুট্টার আবাদ হয়েছিল। তা থেকে কৃষক ফলন পেয়েছে আড়াই লাখ টন। বাজারে দাম ছিল আশানুরূপ। ভুট্টা বিক্রি করে ভালই মুনাফা পেয়েছে তারা। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর আবাদ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে। সময় মতো সার প্রয়োগ, সেচ ও পরিচর্যায় পুষ্ট হয়েছে ভুট্টাক্ষেত। ইতোমধ্যে কোনো কোনো ক্ষেতে বের হতে শুরু করেছে মোচা। এবারে ফলন আশা করা হচ্ছে দুই লাখ ৭০ হাজার টন।

নীলফামারীর কুন্দুপুকুর ইউনিয়নের কুখাপড়া এলাকার সফল কৃষক এবিএম গোলাম মোস্তফা জানান, এবারে দুই একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ভুট্টা আবাদ করেছেন। জমি তৈরি, বীজ, সার, নিড়ানী ও কাটা মাড়াই করতে প্রতি একরে খরচ হতে পারে গড়ে ২২ হাজার টাকা। সে হিসেবে দুই একরে খরচ হতে পারে ৪৪ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। কাটা মাড়াইয়ের সময় দাম ভাল থাকলে বিক্রি হতে পারে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। এতে তার মুনাফা আসবে কমপক্ষে ৮৬ হাজার টাকা।

অপর কৃষক ইটাখোলার জসিয়ার রহমান বলেন, ভুট্টা এমন একটি ফসল যা সারাবছরেই আবাদ করা যায়। তবে ধান, পাট, সরিষাসহ অন্যান্য ফসলগুলো হলো মৌসুমী। ইচ্ছে করলেও আবাদ করা সম্ভব হয় না। ভুট্টা সাধারণত: গরু, মহিষ, ছাগল, মাছ, হাঁস-মুরগির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। যদি মানুষের খাদ্য তালিকার মধ্যে ভুট্টাকে নিয়ে আসা যেতো তাহলে আমরা কৃষকেরা আরও ভালো দাম পেতাম। এতে আমরা অর্থনৈতিকভাবে আরও সমৃদ্ধ হতাম।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, পুষ্টি সমৃদ্ধ ভুট্টা লাভজনক ফসল হওয়াতে কৃষকেরা এ আবাদে ঝুঁকে পড়েছে। কৃষি বিভাগ তাদেরকে নানানভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। মাঠকর্মীরা সার্বক্ষণিক তাদের পাশে রয়েছে। বিশেষ করে তিস্তার চরাঞ্চলের কৃষকেরা ভুট্টা আবাদে অনেক বেশি উৎসাহী। ভুট্টা এখন গরু, মহিষ, ছাগল, মাছ, হাঁস-মুরগির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। আগামীতে মানুষের খাদ্য তালিকায় সংযুক্ত হলে বাড়বে ভুট্টার আবাদ।

সংবাদটি শেয়ার করুন