নীলফামারীর ডিমলায় চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। পাশাপাশি ভালো দামে চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। দেশে এবার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার কারণে চাষিদের সরিষা চাষে আগ্রহ ছিল বেশি। অল্প সময়ে সরিষার ভালো ফলন ও বেশি দাম পাওয়ায় বেশ লাভবান সরিষা চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে ডিমলা উপজেলায় ৭৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৮২০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। বোরো ও আমন মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে জমি ফেলে না রেখে ওই জমিতে সরিষা চাষ করেন চাষিরা। এছাড়াও সরিষা চাষের কারণে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়, আবার বোরো চাষের জন্য জমিতে সারও তেমন দিতে হয় না।
এ উপজেলায় ভালো ফলনে সরিষার কাটা-মাড়াই প্রায় শেষ হয়েছে। উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে সরিষা ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এবার উচ্চ ফলনশীল বারী- ৯, বারী-১৪, বারী-১৭, বারী-১৮ ও দেশি জাতের সরিষা চাষ করেছেন কৃষকরা।
কয়েকজন কৃষক জানান, ১ একর সরিষা চাষ করতে খরচ হয় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। ভালো পরিচর্যায় প্রতি একরে ফলন হয় ১৫ থেকে ১৮ মণ। সরিষার বাজারে ৩ থেকে সাড় ৩ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য ফসল চাষ করে প্রতি বিঘায় যে পরিমান লাভ হয় তার চেয়ে ওই পরিমান জমিতে সরিষা চাষ করে দ্বিগুণ বেশি লাভ পাওয়া যায় বলে জানান তারা।
তবে রোদে শুকিয়ে গুদামজাত করে পরে বিক্রি করলে সরিষার বাজারদর আরো বেশি পাওয়া যাবে বলে জানান গহ্বরপুর গ্রামের সড়িষা চাষি সুলতান আহমেদ। তিনি বলেন, অল্প শ্রম আর স্বল্প খরচে সরিষার চাষ করা যায়। আমি ১৫ একর জমিতে সরিষা উঠিয়েছি, এখন সেই জমিতে ধান চাষ করেছি।
সরিষা চাষি সেলিম জানান, পরিবারের খাবার তেলের চাহিদা মেটাতে তিনি ১ একর জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। সরিষার ফলন খুবই ভালো হয়েছে। নিজের চাহিদা মিটিয়ে উদ্ধৃত সরিষা বিক্রি করেছেন বাজারে। ভালো দাম পেয়ে তিনি খুশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী জানান, কৃষকদের মাঝে সময়মতো সরকারি প্রনোদনার সরিষা বীজ ও সার প্রদান, সরিষা চাষিদের মাঠপর্যায় পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। এবছর তেল ও খৈলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিরা অধিক পরিমান জমিতে সরিষা চাষ করেছেন বলে জানান তিনি।