বান্দরবানের গ্রামীণ এলাকায় ব্রোকলি চাষে সফলতা পেয়েছেন চাষিরা। শহরাঞ্চলে ব্রোকলি বেশ পরিচিত হলেও বান্দরবানের গ্রামীণ এলাকায় ব্রোকলি কিছুটা অপরিচিত। তবে ওষুধিগুণ ও খেতে সুস্বাদু হওয়ায় অপরিচিত সবজি ব্রোকলি চাষ বাড়ছে।
জানা যায়, বান্দরবানের কিছু এলাকায় ব্রোকলি চাষ হচ্ছে। তবে সাঙ্গু নদীর দুই পাড়ে শুষ্ক মৌসুমে জেগে ওঠা চরে ব্রোকলি চাষ হতে দেখা যায়। কয়েকজন চাষি ব্রোকলি চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। স্থানীয় চাষি আবু তাহের বান্দরবান সদরের লাঙ্গির চর এলাকায় সাঙ্গু নদীর তীরে জেগে ওঠা বালু চরে ব্রোকলি চাষ করেছেন। একইভাবে চাষি আবছার উদ্দিন ও বাদশা মিয়াও ব্রোকলি চাষ করেছেন। দুজনই ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান।
চাষি আবছার উদ্দিন জানান, তিনি সাঙ্গু নদীর তীরে জেগে ওঠা চরে প্রায় একবিঘা জমিতে ব্রোকলি চাষ করেছেন। জমিতে পলি জমে মাটি ঊর্বর হয়। শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় জেগে ওঠা চরের মাটি ঊর্বর থাকে। তাই অন্যান্য সবজির মত ব্রোকলির ফলনও ভালো হয়েছে।
চাষি আবছার বলেন, তার প্রায় একবিঘা জমিতে তিন হাজার ব্রোকলি হয়েছে। পাশেই বান্দরবান বাজার, তাই খুব স্বল্প সময়ে বাজারে এসব ব্রোকলি এনে বিক্রি করতে পেরেছেন। পরিপক্ক এক কেজি ব্রোকলি ৬০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি বিক্রি হচ্ছে।
বান্দরবান কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, ব্রোকলি একটি উচ্চ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সবজি। এটি ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগের জন্য উপকারী। নভেম্বর মাসের প্রথমদিকে ক্ষেতে ব্রোকলির বীজ রোপণ করতে হয়। তিন মাস থেকেই ব্রোকলির ফলন উত্তোলন করা যায়।
বান্দরবানের চিকিৎসক ডা. জ্যোর্তিময় ম্রো বলেন, ব্রোকলির পুষ্টিগুণ প্রচুর। গবেষকদের মতে- ব্রোকলি ক্যানসার নিরাপদে খাবার হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। প্রতিদিন ব্রোকলি খেলে ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা হয়। এটি ভিটামিন কে, ভিটামিনসি, ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম এবং ফাইবারে পরিপূর্ণ। তাই এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী বলে জানান এ চিকিৎসক।
বান্দরবান কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা ড. সাফায়ত আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ব্রোকলি বান্দরবান অঞ্চলে তেমন পরিচিত নয়। তবে দেশের অন্যান্য কিছু অঞ্চলেরমত বান্দরবানেও ব্রোকলি চাষ ও খাবার হিসেবে চাহিদা বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, ব্রোকলির পুষ্টি ও ওষুধিগুণ রয়েছে। এসব ব্যাপকভাবে প্রচার হলে মানুষ ব্রোকলিকে ভালোভাবে গ্রহণ করবে এবং খাবার হিসেবে তালিকায় যুক্ত করবে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের মাধ্যমে ব্রকলির গুণ ও লাভ সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার চালানো হলে ব্রোকলির চাষ ও চাহিদা বাড়বে বলে জানান এ কর্মকর্তা।