করোনা (কোভিড ১৯) মহামারিতে দেশের পর্যটনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হোটেল, মোটেল, রিসোর্টস ও গেস্ট হাউসগুলোর ব্যবসা ব্যাপক ধ্বংসের মুখে পড়েছে। এই ক্ষতি পোষাতে শুল্ক ও করের অব্যাহতি দেওয়া জরুরি বলে জানিয়েছেন এসব খাতের মালিকরা। গত মঙ্গলবার মতিঝিল এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত হোটেল, মোটেল, রিসোর্টস ও গেস্ট হাউস উন্নয়ন বিষয়ক ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে বক্তারা এসব বলেন।
তারা বলেন, বিদেশি পর্যটকদের অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে যেসব সরঞ্জাম ও পণ্য আমদানি দরকার, সেগুলো আনতে বিপুল পরিমাণে শুল্ক দিতে হচ্ছে। আবার সেবার ওপরে ভ্যাট দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আয়ের ওপরে ৩৭ শতাংশ কর প্রদান করতে হচ্ছে। এই বিপুল পরিমাণ শুল্ক-করের চাপে এসব খাতের বিকাশ প্রায় ধ্বংসের মুখে পড়েছে। এই ক্ষতি পোষাতে শুল্ক ও করের অব্যাহতি জরুরি হয়ে পড়েছে।
আমদানি করা সরঞ্জামের ওপর শুল্কমুক্ত করলে ভাড়াসহ অন্যান্য সার্ভিস চার্জ কমানো সম্ভব হবে জানিয়ে তারা বলেন, বিদেশি পর্যটকদের বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে ফ্লাইট পূর্ববর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করোনা পরীক্ষা করানোর বাধ্যবাধকতা শিথিল করা দাবি রাখেন। একই সঙ্গে ভিসা প্রক্রিয়া আরো সহজ করার দাবি রাখেন।
বাংলাদেশে পর্যটন খাতের বিকাশের ক্ষেত্রে অপর্যাপ্ত ব্র্যান্ডিংকে দায়ী করে বক্তারা বলেন, পর্যটন বোর্ডের মাধ্যমে এ খাতে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করার তাগিদ দেন। এজন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের দাবি রাখেন। এছাড়া বৈঠকে গেস্ট হাউস উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন দাবি বৈঠকে।
বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর মধ্যে হোটেল, মোটেল, রিসোর্টস, গেস্ট হাউজ অন্যতম। তাই স্ট্যান্ডিং কমিটিকে এ খাতের সম্ভাবনা, সমস্যা ও সম্ভাব্য সমাধান বের করে প্রস্তাবনা আকারে এফবিসিসিআইতে জমা দেওয়ার আহ্বান করেন। হোটেল, রিসোর্টস পর্যটকদের যৌক্তিক দামে মানসম্মত সেবা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসাইন বলেন, এ খাতে দক্ষ জনবল তৈরিতে প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ, স্যুভেনির ও প্রকাশনা তৈরির তাগিদ দেন।
এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, পর্যটনের উন্নয়নে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে আসছে এফবিসিসিআই। বাংলাদেশের পর্যটনের উন্নয়নে কানাডা-বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের আলোচ্যসূচিতেও এ খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান খবির উদ্দিন আহমেদ, কো-চেয়ারম্যান খন্দকার রুহুল আমিন, তৌফিক উদ্দিন আহমেদ, মহিউদ্দীন হেলাল, এ এইচ এম আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া, মো. মাহবুব আলম, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মেহদী আমিন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আনন্দবাজার/টি এস পি