ঢাকা | বুধবার
৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কৃষকের স্বপ্ন ‘বঙ্গবন্ধু-১০০’

কৃষকের স্বপ্ন ‘বঙ্গবন্ধু-১০০’
  • শীত সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন
  • পরিক্ষণ ফিল্ড সিলেট বিভাগরে হবিগঞ্জে

সিলেট অঞ্চলে প্রায় সময় আগাম বন্যায় তলিয়ে যায় হাওর এলাকার ধান। আবার আগাম চাষ করলে শীতের কবলে পড়ে ধান, হয়ে যায় চিঁটা। এ সমস্যা সমাধানে এবার শীত সহিষ্ণু নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করা হয়েছে। নাম দেয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০’। নতুন উদ্ভাবিত ধানের এই জাত যেমন শীত সহিষ্ণু- তেমনি ফলনও আশানুরূপ হবে। এতে স্বপ্নের জাল বুনছেন সিলেট অঞ্চলের কৃষকরা।

জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট নতুন এই জাত উদ্ভাবনে কাজ করছে। পরীক্ষণ ফিল্ড করা হয়েছে হবিগঞ্জের নাগুড়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্লটে। সম্প্রতি পরীক্ষণ প্লটটি পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবির ও ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস। এ সময় তারা নতুন এই জাতে ব্যপক সম্ভাবনার কথা জানান।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবির বলেন, ‘প্রতি তিন বছরে একবার মার্চ মাসের চৈতালী ঢল আর এপ্রিল মাসের বৈশাখী ঢলে হাওর এলাকার ফসল তলিয়ে যায়। আবার আগাম চাষ করলে শীতের কবলে পড়ে ধানে চিঁটা হয়ে যায়। এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট নতুন জাত উদ্ভাবনের কাজ শুরু করে। এতে তাদের সফলতা এসেছে। ইতোমধ্যে এর পরীক্ষণ প্লট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কিশোরগঞ্জের নিকলীর হাওর, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা বাকাটিয়ার হাওর, বানিয়াচং উপজেলার মকার হাওর, নবীগঞ্জ উপজেলার গুঙ্গিয়াজুরী হাওর, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর হাওর, শনির হাওর ও মাটিয়ান হাওরে।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন হাওরে কৃষকরা বেশি ফলন চায়। তারা প্রতি হেক্টরে ৭ থেকে ৮ টন ফলন চান। সেই হিসেবে এই ধান হেক্টরপ্রতি ৭ টন ফলন হবে। আমরা এই ধান নিয়ে আরও গবেষণা করব। যেন এর ফলন ৮ থেকে ৯ টন বা ১০ টনে নিয়ে যাওয়া যাওয়া যায় সেই চেষ্টা আমাদের থাকবে। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে আরও কয়েকটি জাত অবমুক্ত করা হবে। যেগুলোর ফলন আরও বেশি হবে।’

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো মোজাম্মেল হক বলেন, ‘পরীক্ষণ ফিল্ডে নতুন এই জাতের বেশ কয়েকটি লাইন দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। তাই এই জাতটি নিয়ে আমরা বেশ আশাবাদি। শিগগরিই এই ধান নতুন জাত হিসাবে অবমুক্ত করা হবে। এতে হাওরের কৃষক ভাইয়েরা অনেক উপকৃত হবেন।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০’ জাতের ফসলের মেয়াদ হবে ব্রি ২৮ ধানের মতো ১৫০ দিন। শীত সহনীয় হওয়ায় অক্টোবরেই এর বীজতলা তৈরি করা যাবে। এতে শীতে বীজতলার কোনো ক্ষতি হবে না। নতুন জাতের এই ধানটি কৃষকদের মধ্যে খুবই সমাদৃত হবে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন