আজিজুর রহমান
গ্রামীণ ঐতিহ্যের আলোর দিশারী এবং গ্রামীণ জীবনে অন্ধকার দূর করার একমাত্র অবলম্বন ছিল কুপি বাতি ও হারিকেন! হারিকেন ও কুপি জ্বালিয়ে রাতে হাট যেত হাটুরা, গৃহস্থলির কাজ করত গৃহিণী,এবং রাস্তায় চলাচল সহ উঠানে কিংবা বারান্দায় অথবা ঘরে পড়াশুনা করত ছেলেমেয়েরা।
কুপি ও হারিকেনের কেরোসিন তেল আনার জন্য প্রতিটি গৃহস্থ বাড়িতে থাকতো বিশেষ ধরনের কাচের অথবা প্লাস্টিকের বোতল। সেই বোতলে রশি লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হতো বাঁশের খুঁটিতে। এ দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না গ্রামীণ সমাজে। বর্তমান সময়ে হারিকেন ও কুপি বাতির পরিবর্তে স্থান করে নিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ ও সোলার প্লান্ট এবং চার্জার লাইট।
সমাজের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ার হারিয়ে হাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ‘কুপি বাতি হারিকেন‘! এক সময়ে গ্রামীণ সমাজে প্রতিটি ঘরে ঘরে আলোর অন্যতম বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হতো হারিকেন। এমন এক সময়ও ছিল সবার ঘরেও হারিকেন পাওয়া যেতনা। কিন্তু আধুনিক সভ্যতায় এর চিত্র ভিন্ন। সামাজিক পরিবর্তের সাথে সাথে প্রতিটি ঘরের চিত্র-টাই পাল্টে গেছে। গ্রামীণ সমাজের সন্ধ্যার বাতি ‘কুপি ও হারিকেন‘ এখন সোনালী অতীত স্মৃতিতে পরিনত হয়েগেছে।হাজার বছরের ঐতিহ্যের বাহন কুপি বাতি ও হারিকেন এখন আর চোখে পড়ে না।
ঐতিহ্যের এই কুপি বাতি ও হারিকেন গুলো ছিল বাহারি নকশার।এর মধ্যে মাটি, লোহা, কাচের, আবার পিতলের তৈরির কুপিও ছিল। নিজ নিজ সামর্থ অনুযায়ি কুপি ও হারিকেন কিনে সেগুলো ব্যবহার করতেন। গ্রাম বাংলার আপাময় লোকের কাছে কুপি ও হারিকেনের কদর হারিয়ে গেলেও এখনও অনেকে আকড়ে ধরে আছেন কুপি ও হারিকেনের স্মৃতি।
হয়ত একদিন কুপি বাতি ও হারিকেন দেখতে যেতে হবে যাদুঘরে। তাই বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী নির্দেশনটি টিকিয়ে রাখার দাবি জানিয়েছেন নতুন প্রজন্ম!
লেখক:
আজিজুর রহমান,
শিক্ষার্থী,
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(হাবিপ্রবি)