‘হ্যাপি বার্থডে টু ইউ’ এই বাক্যটি বলতে পারে না এমন মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে খুবই নগন্য। মানুষের বিবেক বুদ্ধি হওয়ার পূর্বেই শুভেচ্ছা জানায় মানুষ। আই লাভ ইউ! আই মিস ইউ! এই শব্দগুলো দিয়ে উইশ করতে মানুষের অনেক চিন্তা ভাবনা করতে হয় কিন্তু ‘হ্যাপি বার্থডে টু ইউ’ বলতে মানুষের এতোটা ভাবতে হয় না, কারণ এটি এমন একটি উইশ যা অবুঝ শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়সীকেও নির্দিধায় করা যায়। বাক্যটি ছোট থেকেই যেমন সবার প্রিয় তেমনি তার সাথে মিশে থাকে হাজারো স্মৃতির সমারহ।
অনেকেই ট্রিট দিতে ক্যানটিন কাপাতেও ভুল করতো না। কিন্তু সম্প্রতি করোনা ভাইরাস সবকিছু থমকে দিয়েছে! করোনার ভয়াল থাবা থেকে বাঁচতে স্তব্ধ আজ গবি ক্যাম্পাস। তবু দিন কেটে যাচ্ছে। প্রতি বছরের মতো হাজারো শিক্ষার্থীদের আছে জন্মদিন, নেই শুধু চিরচেনা ক্যাম্পাসের সেই আনন্দ উল্লাস! এ বিষয়ে আরও জানার চেষ্টা করেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোঃ আশিকুর রহমান।
জন্মদিন নিয়ে আরও কথা হয় প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সজিব মোড়লের সাথে। তিনি জানায়,’যদিও আমি কখনো জন্মদিন পালন করিনি, অর্থাৎ কেক কাটিনি কিন্ত এই বছরের জন্মদিন নিয়ে মনের মধ্যে ছিল বিভিন্ন পরিকল্পনা। গত প্রায় এক বছর থেকে আমাদের ব্যাচের সব বন্ধুদের জন্মদিন পালন করা হচ্ছে খুব ধুম ধাম করে, যেখানে আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রধানসহ সকল শিক্ষকগণ ও ছোট ভাই বোনেরাও উপস্থিত থাকতো। যা দেখে আমার মনেও জন্মদিনটা সবাইকে নিয়ে একটু অন্য রকম করে পালন করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো এর মধ্যেই করোনা চলে আসলো। এবার আর আশা পূরন হলোনা! শিক্ষকগণ আর ছোট ভাই বোন, বন্ধুদের নিয়ে জন্মদিন পালনও হলোনা।’
ছবিঃ সজিব মোড়ল
করোনার কারনে জন্মদিনের আনন্দ উল্লাস মিস করেছে এমন শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক।
প্রিয় ক্যাম্পাস ছেড়ে কেমন কেটেছে এবার করোনাময় জন্মদিন এ বিষয়ে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৃষা মন্ডল নিপা বলেন,’ জন্মদিনের আনন্দ যেন একধাপ বাড়িয়ে দেয় বন্ধুদের উপস্থিতি। করোনার কারনে যদিও ক্যাম্পাসে জন্মদিন পালন হয়নি এই বছর তথাপি আপুর হাতের বানানো কেক আর ফেমিলির সাথে উৎযাপন করা জন্মদিন মন্দ ছিল না। বেশ উপভোগ করেছি এপ্রিল ১৮’র প্রিয় সেই দিনটি, কিন্তু ক্যাম্পাস ও বন্ধুদের জন্য একটি শুন্যতা কাজ করেছে সব সময়।
ছবিঃ তৃষা মন্ডল নিপা
করোনার কারনে জন্মদিনের আনন্দ উল্লাস মিস করেছে এমন শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক।
এ বিষয়ে আরও কথা হয় ফিজিওথেরাপি বিভাগ থেকে সদ্য পাসকৃত ইন্টার্নশিপে থাকা ডাঃ সুরঞ্জন বৈদ্য (পি.টি) তার সাথে। তিনি বলেন,’ পরিবার ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর সম্মানিত শিক্ষকমনডলী, সহপাঠী, সিনিয়র, জুনিয়র সবাইকে নিয়ে তৈরি হয় নতুন পরিবার। ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বেশি মিস করি আমার জন্মদিন উৎযাপন। রাত ১২ টা বাজার সাথে সাথে বন্ধুদের কেক নিয়ে সারপ্রাইজ দেওয়া, তারপর ক্লাসে সহপাঠী ও শিক্ষকমন্ডলীর সাথে জন্মদিন উদযাপন এবং রাতে সিনিয়র, জুনিয়র সবাইকে নিয়ে বিরিয়ানি রান্না করে খাওয়া। কিন্তু এবার করোনার কারনে সবই রয়ে গেছে মিস করার খাতায়।
ছবিঃ ডাঃ সুরঞ্জন বৈদ্য (পি.টি)
ভিন্নধর্মী এমন জন্মদিনের আগমন মেনে নিতে চাইনি কোনো শিক্ষার্থী। তবু বিধাতার নিয়ম মানতে মানুষ বাধ্য। খুব দ্রুতই এই মহামারিকে বিদায় জানিয়ে জন্ম নিবে এক নতুন পৃথিবী এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে