ঢাকা | শুক্রবার
২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নবজাতক ওয়ার্ডে করোনা

নবজাতক ওয়ার্ডে করোনা

ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ভাইরাসজনিত জ্বর, সর্দি, কাশির ব্যাপক পাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভিড় করছে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। এছাড়াও গলাব্যথা, টনসিল সমস্যা, শ্বাসনালির সংক্রমণ, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়েও রোগিরা চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।

একসপ্তাহ আগেও শীতের প্রাদুর্ভাব অনেকটা কমে গিয়েছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে আবার ঠান্ডা বাড়ে যাওয়ায় শরীর সহজে মানিয়ে নিতে পারছে না শিশু, বয়স্ক অনেকেই। এ অবস্থায় ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি লেগেই রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অতিসাবধানতা মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতালে প্রতিদিনই ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভর্তি হচ্ছেন অনেক রোগি। হঠাৎ করে ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগির সংখ্যা রেড়েছে। বিশেষ করে ঠান্ডায়, সর্দি জ্বর, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা।

বর্তমানে হাসপাতালে প্রায় আড়াইশ শিশু নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি ও জ্বর নিয়ে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। যা সাধারণ অন্য সময়ের তুলনায় বেশি। এছাড়াও নবজাতক ওয়ার্ডে নানাজটিলতা নিয়ে ১৭৫ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। এরমধ্যে তিনজন নবজাতক করোনা পজেটিভ হয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় একটি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। যাদের বয়স ০ থেকে ২৮ দিন।

হাসপাতালের শিশু বিভাগের সিনিয়র কনসালন্টেন্ট ডা. সোহাগ ইভা আমিন বলেন, শীত বাড়ায় এক সপ্তাহ ধরে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশু ও নবজাতক রোগির সংখ্যা বেড়েছে। শীত মৌসুমে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাই বেশি হয়। হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু মিলে চারটি ওয়ার্ডে কোনোটিতেই শয্যা খালি নেই। বর্তমানে শয্যার বিপরীতে প্রায় ৩ থেকে ৪ গুণ রোগি চিকিৎসা নিচ্ছে। এখন হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দাও স্থান সংকলন হচ্ছে।

নগরীর সানকিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আউয়াল জানান, আমার পরিবারের প্রতিটি সদস্যই বর্তমানে ঠান্ডা জ্বর সর্দি কাশিতে আক্রান্ত। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করছি।

অন্যদিকে, জেলার প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ঠান্ডাজনিত নানারোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন শতশত রোগি চিকিৎসা নিচ্ছে। এ বিষয়ে জেলার গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাঈন উদ্দিন জানান, তুলনামূলকভাবে অন্যান্য সময়ের চেয়ে এ শীতে হাসপাতালে ভর্তির চাপ একটু বেশি। বর্তমানে জরুরি বিভাগ ও ওয়ার্ডে প্রতিদিনই প্রায় দুই শতাধিক রোগি ঠান্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমরাও এ পরিস্থিতিতে সাবধানতা মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছি।

সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ময়মনসিংহ মেডিকেলসহ প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগির সংখ্যা বাড়ছে। সর্দি, কাশি, জ্বর যেহেতু করোনার লক্ষণ তাই সবাকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। পরিবারের কেউ অসুস্থতাবোধ করলে নিজ থেকে ওষধ খাওয়া থেকে বিরত থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন তিনি।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন