তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আইপিটিভি, ইউটিউব চ্যানেল ও অনলাইন পোর্টাল পরিচালনায় দেশের প্রচলিত নিয়ম এবং বিধি-বিধান সবাইকে মেনে চলতে হবে। কেউ নিয়ম ভাঙলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেসরকারি টিভি চ্যানেল মালিকদের সংগঠনের (আ্যটকো) প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, পত্রিকার অনলাইনগুলোকে অনুমোদন দিয়েছি। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা আমাদের কাছে অনলাইন হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিল। আমরা সেটি দিয়েছি। সেখানে শর্ত ছিল, যেটা প্রিন্ট আকারে প্রকাশ করা হয় সেটাই শুধু যাবে। এর বাইরে কিছু যাবে না। সেখানে আবার ইউটিউব চ্যানেল যুক্ত করে দিয়ে নিউজ প্রচার করা কিংবা টক শো করার কথা নয়। যেহেতু এগুলোর অনুমোদন নেই, আ্যটকোর সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা এগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আমাদের সরকার অবাধ তথ্য প্রবাহে বিশ্বাস করে। সেই কারণে এতগুলো প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। প্রাইভেট টেলিভিশনের যাত্রাই শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। যেটি গত ১৩ বছরে আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৩ ডজনের মতো প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল এখন সম্প্রচারে আছে। পত্র-পত্রিকার সংখ্যা ৪০০ ছিল, এখন ১ হাজার ২৫০। অনলাইন নিউজ পোর্টাল কতটা সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়, কয় শ কিংবা কয় হাজার—বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমরা অবাধ তথ্যপ্রবাহে বিশ্বাস করি কিন্তু অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশের প্রচলিত নিয়ম এবং বিধি-বিধান সবাইকে মেনে চলতে হবে। একজন যেন অন্যজনের আঙ্গিনা ইনভেড না করে। এখন টেলিভিশন চ্যানেলগুলো যদি পত্রিকাও প্রকাশ করা শুরু করে সেটা যেমন পারে না, তাহলে পত্রিকাগুলো যদি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর মতো সংবাদ প্রচার করে সেটিও সমীচীন নয়। সুতরাং টেলিভিশন চ্যানেলের যারা অনলাইন পোর্টাল চালাচ্ছেন তাদেরও এটার অনুমোদন নিতে হবে। অনেকগুলো টেলিভিশন চ্যানেল অনলাইন পোর্টাল চালান। আমরা কিছু কিছু আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুমোদন দিয়েছি। কেউ কেউ এখনো অনুমোদন নেয়নি। সেগুলো অনলাইন পোর্টাল হিসেবে অনুমোদন নিতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে সঠিক তথ্য দেওয়া এবং অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করা, একটি গণতান্ত্রিক সমাজের সেটি পূর্ব শর্ত। সেটি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমাদের সরকার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পত্রিকা যেন টেলিভিশনের আঙ্গিনা ইনভেড না করে। আবার টেলিভিশন যেন পত্রিকার আঙ্গিনা ইনভেড না করে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আইপিটিভি বা ইউটিউব চ্যানেলে নিয়মবহির্ভূতভাবে কেউ সংবাদ প্রচার করলে সেটিও নিয়ম বহির্ভূত, আইন বহির্ভূত। আমি আশা করবো যে এই কাজগুলো হবে না। আমরা এ ব্যাপারে আইন অনুযায়ী কর্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি সর্বোচ্চ আগামী সপ্তাহের মধ্যে আ্যটকোর পরামর্শ অনুযায়ী আমরা অনেকগুলো কোম্পানির কাছ থেকে আমরা প্রেজেন্টেশন নিয়েছিলাম। সেই প্রেজেন্টেশনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি কাদের দিয়ে এটি করানো সম্ভব। দু’এক দিনের মধ্যে সেই সিদ্ধান্ত আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেবো। টিআরপি নির্ধারণে তারা যাতে দেড় থেকে ২ মাসের মধ্যে কার্যক্রম শুরু করতে পারে।
তিনি বলেন, টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিস্টেম অবশ্যই ডিজিটাল হতে হবে। তা ছাড়া পে চ্যানেল করা যাবে না। পে চ্যানেল করেও কোনো লাভ হবে না। পে চ্যানেল কে হবে বা না হবে এটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিষয়। ভারতেও পে চ্যানেল সরকার করে দেয়নি।