ঢাকা | শুক্রবার
২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১০ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নৌকাবাইচ দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়

নৌকাবাইচ দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়

ঢেউয়ের কলতান এবং মাঝি-মাল্লাদের বৈঠার ছলাত ছলাত শব্দে উত্তাল হয় শান্ত রূপসা। আর দু’পাড়ের লাখো দর্শকের করতালিতে পরিবেশ হয়ে ওঠে উৎসব মুখর। শীতের বিকেলের মিষ্টি রৌদে গ্রাম বাঙ্গলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ উপভোগ করে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। তবে, বাইচ চলাকালীন বাইচ দল ‘সোনার বাংলা’র নৌকাটি রূপসা নদীতে ডুবে গেলে কিছুটা ছন্দপতন ঘটে।

রূপসা তীরের মানুষের নির্মল বিনোদনের অনুষঙ্গ নৌকা বাইচের রীতি-আচার বহু প্রাচীন। আবেগ-উত্তেজনার নৌকা বাইচ হয়ে ওঠে এ অঞ্চলের আপামর মানুষের নির্মল আনন্দের খোরাক। রূপসা নদীর জলতরঙ্গের সঙ্গে খুলনাবাসীর গড়ে উঠেছে গভীর মিতালী। আবহমান বাংলার চিরন্তন এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতি বছরের মত এবারও খুলনার রূপসা নদীতে গত শনিবার ‘ফ্যান্টাস্টিক ১৪ তম খুলনা নৌকা বাইচ’ অনুষ্ঠিত হয়। শিল্প প্রতিষ্ঠান আকিজ বেকার্স লিমিটেড’র পৃষ্ঠপোষকতায় খুলনা নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এ নৌকা বাইচের আয়োজন করে।

দুপুরে নগরীর ২নং কাস্টমঘাটে বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ঘোষণা করেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। পরে রূপসা নদীর কাস্টম ঘাট থেকে পীর খানজাহান আলী (র.) সেতু পর্যন্ত বাইচ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় খুলনার দিঘলিয়া, কয়রা, নড়াইল, মাগুরা ও গোপালগঞ্জের ১২টি দল অংশ নেয়। বাইচ চলাকালীন দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে দিঘলিয়ার ‘সোনার বাংলা’ নামক নৌকাটি নদীতে ডুবে যায়।

নৌকাটির মালিক ফুলতলার আক্কাস আলী। তবে, দ্রুত মাঝি-মাল্লাদের উদ্ধার করায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে, উৎসবমূখর এ নৌকা বাইচ দেখতে রূপসার দু’ তীরে হাজার হাজার দর্শনার্থী জড়ো হয়। তারা তীরবর্তী ভবনের ছাদ, বিভিন্ন ঘাট এবং নৌযানের ওপর বসে বাইচ উপভোগ করেন। এ সময় বাইচ নির্বিঘ্ন করতে নদীতে জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ, নৌবাহিনী ও কোষ্টগার্ডসহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল দেয়।

বাইচ শেষে বিজয়ী প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জকারী বাইচ দলকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কার ছিল ১ লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৬০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার ছিল ৩০ হাজার টাকা। প্রথম পুরস্কার লাভ করে খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুরের সুন্দরবন টাইগার। এর আগে নৌকা বাইচ উপলক্ষে সকালে নগরীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন।

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন