ঢাকা | মঙ্গলবার
১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘুরবে অর্থনীতির চাকা

ঘুরবে অর্থনীতির চাকা
  • ঝোপঝাড় কেটে সড়ক, হাঁটারপথ, শিশুপার্ক ও সবুজ বনায়ন নির্মাণ

প্রতিদিন হাজার-হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক ভিড় জমাচ্ছেন চায়ের রাজধানী খ্যাত সিলেটের মৌলভীবাজারে। অথচ এ জেলা শহরে নেই ভালো কোনো বিনোদন কেন্দ্র। এতে পর্যটকসহ স্থানীয়রা বেশ হতাশ ছিলেন। অবশেষে পর্যটন জেলা হিসেবে খ্যাত সিলেটের মৌলভীবাজারে নির্মিত হতে যাচ্ছে একটি পর্যটন কেন্দ্র। নতুন পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পৌরবাসী। পযর্টন কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে মৌলভীবাজার পৌরসভা। মানসম্মত নির্মাণ কাজ আর নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দাবী পৌরবাসীর।
মৌলভীবাজার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা জানায়, শহরঘেঁষে বয়ে চলা মনু নদের পাড় দিয়ে একসময় মানুষের হাঁটাচলার পথ ছিল। বহুদিন ধরেই সেই পথটি পরিত্যক্ত। দখল-দূষণ, ঝোপঝাড় আর আবর্জনায় সে পথে এখন কেউ আর পা বাড়ায় না। তবে পৌরসভার নতুন উদ্যোগে সেই নদের পাড় সাজবে নতুন সাজে। সড়ক, হাঁটার পথ, শিশুপার্ক, বনায়নের মাধ্যমে সাজানো হচ্ছে পাড়।

সরেজমিনে শান্তিবাগ এলাকায় দেখা যায়, মৌলভীবাজার প্রধান ডাকঘর এলাকা থেকে মনু সেতু পর্যন্ত বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণকাজ চলছে। নদের পাড়ের উপর রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। সুরক্ষা দেয়াল তেরির পাশাপাশি রাস্তায় আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ চলছে। পর্যটন কেন্দ্রটি নিমার্ণ হলে ঘুরবে অর্থনীতির চাকা। অপরদিকে সকল বয়সের মানুষ অবসরে একটু বিনোদনের জন্য শ্রীমঙ্গল কিংবা তার আশপাশের স্থানের উপর ভরসা রাখতে হবে না।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ‘খান অ্যান্ড সন্স লিমিটেড’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, শহরের শান্তিবাগ এলাকায় নদের পাড়ে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু হয়েছে প্রায় তিন মাস আগে। এ প্রকল্পে মনু সেতু থেকে ডাকঘর পর্যন্ত ৮০০ মিটার আরসিসি রাস্তা নির্মাণ করা হবে। সড়কের দুই পাশে থাকবে হাঁটার পথ। থাকবে একটি ক্যানটিন। নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা দুটি শৌচাগারও থাকবে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ১০ কোটি ১১ লাখ ১৬ হাজার ২৮৫ টাকা। এর মধ্যে ৩০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সালেহ আহমদ পাপ্পু জানান, শহরের শান্তিবাগ এলাকায় ‘মনু নদের পাড়ে সড়ক, শিশুপার্ক, হাঁটাপথ ও সৌন্দর্যবৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পে এরই মধ্যে সড়কের গাইডওয়াল (সুরক্ষা দেয়াল) তৈরি হয়েছে। সড়ক ঢালাই ও ক্যান্টিন নির্মাণের কাজ চলছে। মনু নদের পারের সৌন্দর্য বাড়াতে ফুল ও নানা জাতের গাছ লাগানো হবে। নদের পারজুড়ে লাগানো হবে বাতি।

তিনি আরো বলেন, এটি বাস্তবায়নের পর শহরের সব বয়সের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের বিনোদন ও অবসর কাটানোর ক্ষেত্রে দারুণ জায়গা হবে। পাশাপাশি অর্থনীতির চাকাও ঘুরবে। মানসম্মত কাজের জন্য নিয়মিত কাজ তদারকি করছেন বলেও জানান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, শহরের শান্তিবাগ এলাকার মনু নদের পাড়টি হাঁটার পথ হিসেবে একসময় ব্যবহৃত হয়েছে। সংক্ষিপ্ত পথ হিসেবে পূর্ব পাশের মানুষ মনু সেতু থেকে পশ্চিম দিকে এবং পশ্চিম পাশের মানুষ পুরনো থানা এলাকা থেকে পূর্ব দিকে যাতায়াত করেছে। কিন্তু অনেক দিন ধরে পাড়টি সংস্কার না হওয়ার কারণে ঝোপঝাড়ে পরিত্যক্ত ছিল। পাড়টি অনেকে দখলও করেছে। কেউ কেউ অস্থায়ী শৌচাগার নির্মাণ করেছে। এতে নদের পাড়টি ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রকল্পটি শহরবাসীর জন্য দারুণ সুখবর। শহরে হাঁটাচলা বা অবসর কাটানোর কোনো জায়গা নেই। এ প্রকল্পটি সেই প্রত্যাশা পূরণ করবে বলেও আশাবাদ তাদের।

পৌর মেয়র মো. ফজলুর রহমান জানান, আমরা শহরের সৌন্দর্যবর্ধনের দিকে দৃষ্টি দিয়েছি। তারই অংশ হিসেবে মনু নদের তীরের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ প্রকল্প শহরবাসীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের হাঁটাচলা ও বিনোদনের জন্য কোনো অসুবিধা হবে না। এখানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন