আন্তর্জাতিক মাপকাঠিতে বাংলাদেশের ৩০-৪০ শতাংশ মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান।
তিনি বলেন, ৫০ বছরে বাংলাদেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সূচক নিয়ে গর্বের জায়গা থাকলেও দ্রারিদ্র্যের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে এখানকার ৩০-৪০ শতাংশ মানুষ এখনো দারিদ্রসীশার নিচে। এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের আরও সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার।
সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে একটি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আকবর আলী খান বলেন, দেশের উন্নয়ন হলেও এটি সবদিকে সমানভাবে হয়নি। যেকোনো সময় যেকোনো দিকে আমরা পিছিয়ে পড়তে পারি। দুর্বলতাগুলোকে স্মরণে রেখে সমন্বিতভাবে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদ চূড়ান্তভাবে অর্জিত হয়েছে। তবে এখন গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। গণতন্ত্র না থাকলে দেশে টেকসইভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য নিয়ে চললেও, দুর্নীতির কারণে সমাজের সকল স্তরে সাম্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হচ্ছে না। দুর্নীতির লাগাম টেনে না ধরলে সমাজে অসঙ্গতি বেড়েই যাবে।
গতকাল সোমবার রাজধানী ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সিজিএস চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাফর ইমাম, বীর বিক্রম; মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান, বীর বিক্রম; মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বীরপ্রতীক। তাঁরা অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন।
সিজিএস আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ৫০ বছর’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদেরকেও পুরষ্কৃত করা হয়। জিল্লুর রহমান বলেন, ক্ষমতাসীন দলের পরিবর্তনের সাথে সাথে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসেরও পরিবর্তন দেখতে পাওয়া যায়। প্রতিবেশি দেশ ভারত আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বলে প্রচার করছে, অস্বীকার করছে আমাদের স্বাধীনতাকামী জনগণের আত্মত্যাগ।
ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন- এক ক্ষুধার্ত, দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে বাংলাদেশ আজ পরিণত হয়েছে উন্নয়নশীল দেশে। অর্থনৈতিক সূচকে প্রতিবেশি যেকোনো দেশের চেয়ে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে থাকলেও গণতন্ত্রের সূচকে বাংলাদেশ আশানুরূপ অবস্থান অর্জন করতে পারেনি।
আনন্দবাজার/শহক