ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন টেকসই উন্নয়ন

অস্ত্র প্রতিযোগিতায় সম্পদ ব্যয় না করে টেকসই উন্নয়নে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলার উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই আহ্বান জানান তিনি। গতকাল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করেছিলেন।

গত দুই বছর ধরে করোনাভাইরাস মহামারী গোটা বিশ্বব্যবস্থাকে যে নতুন সংকটের মুখোমুখি করেছে। এই সংকট প্রমাণ করেছে আমরা কেউই আলাদা নই বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শান্তিপূর্ণভাবে এই পৃথিবীতে বসবাস করতে হলে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি জবাবদিহিতামূলক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর শান্তির আদর্শকে পুরোপুরি ধারণ করে পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ ও সমঝোতার ভিত্তিতে সবার সঙ্গে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ সদাপ্রস্তুত।

স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশের মানুষ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এর মধ্য দিয়ে শান্তির মূল্য এবং সমগ্র মানব জাতির গভীরতম আকাঙ্ক্ষাগুলো অনুধাবন করেছে।

ফিলিস্তিনের জনগণের ন্যায্য দাবির পক্ষে বাংলাদেশের অবিচল সমর্থনের কথা বলেন তিনি। সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ১১ লাখের বেশি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সাময়িক আশ্রয় দিয়ে এই অঞ্চলে একটি বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় এড়াতে বাংলাদেশের ভূমিকার কথাও তিনি বলেন।

তিনি বলেন, এই চরম সঙ্কটময় সময়ে আমি অস্ত্র প্রতিযোগিতায় সম্পদ ব্যয় না করে তা সার্বজনীন টেকসই উন্নয়ন অর্জনে ব্যবহার করার আহ্বান জানাই। আসুন,আমরা সার্বজনীন শান্তির জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কর্মযজ্ঞে নেমে পড়ি।

শোষিত মানুষের অধিকার আদায় এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি স্বাধীনতার পর দেশের উন্নয়নে জাতির পিতার নেওয়া উদ্যোগগুলোও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বশান্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক পাওয়ার কথা বলেন তিনি।

শান্তি প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগ তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি উপজাতিদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটিয়ে শান্তি-চুক্তি স্বাক্ষর করি।

১৯৯৭ সালে আমরাই প্রথম জাতিসংঘে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিকাশে কর্মসূচি গ্রহণের লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করি, যা ১৯৯৯ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর গৃহীত হয়। সে অনুযায়ী জাতিসংঘ ২০০০ সালকে শান্তির সংস্কৃতির আন্তর্জাতিক বছর এবং ২০০১-২০১০ কে শান্তির সংস্কৃতি ও অহিংস দশক’ ঘোষণা করে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার,প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে মীমাংসার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের ভূমিকা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, জাতিসংঘে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে আমরা গর্ববোধ করি।

আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী প্রজন্মের জন্য জাতির পিতার স্বপ্নের আত্মমর্যাদাশীল,উন্নত এবং সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আনন্দবাজার/ টি এস পি

সংবাদটি শেয়ার করুন