ঢাকা | বুধবার
১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র পাদুকা শিল্প

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র পাদুকা শিল্প

একসময় বন্দরনগরীতে প্রায় ৬০০ ক্ষুদ্র পাদুকা কারখানা থাকলেও বর্তমানে চালু আছে মাত্র ৩৫০টি কারখানা।

চট্টগ্রাম ক্ষুদ্র পাদুকা মালিক সমিতির তথ্য অনুসারে, ২০১২ সাল থেকে করোনার আগ পর্যন্ত চীনা জুতার বাজার সয়লাব হয়ে যাওয়ায় প্রায় ১৫০টি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এপর করোনার প্রভাবে বন্ধ হয়ে যায় ১০০টি কারখানা। এখন মাত্র ৩৫০ কারখানা চালু আছে। তাছাড়া ২০১২ সালের আগে এ ছিল্পের বার্ষিক টার্নওভার ছিল ৫০০ কোটি টাকা। এখন বছরে ২০০ কোটি টাকার মতো বিক্রি হয়।

করোনায় এ খাতে লোকসান হয়েছে কমপক্ষে ২০০ কোটি টাকা। মহামারির প্রভাবে বিক্রি ও কার্যাদেশ কমে গেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। এছাড়াও এ খাতের অর্ধেকেরও বেশি শ্রমিক-কর্মচারী কারখানা বন্ধের কারণে অন্য পেশায় চলে গেছেন।

এক সময় বছরে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ জুতা উৎপাদন হতো এও শিল্পে। করোনাকালে গত বছর উৎপাদন হয়েছে ১ কোটির মতো।

স্বাধীনতার আগ থেকেই চট্টগ্রামের মাদারবাড়ি এলাকায় কয়েকটি কারখানায় চামড়ার জুতা তৈরি হতো। কিন্ত ১৯৯০-এর দশকে এই শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটে। পূর্ব ও পশ্চিম মাদারবাড়ী, অভয় মিত্র ঘাট, জলসা মার্কেট ও নালাপাড়ায় সবচেয়ে বেশি গড়ে উঠেছে এই ক্ষুদ্র পাদুকা শিল্প। এই কারখানাগুলোতে প্রস্তুতকৃত জুতায় ৯০ শতাংশ রেকসিন ও ১০ শতাংশ চামড়া ব্যবহৃত হয়।

অনেক কারখানা মালিকই এখন টিকে থাকার জন্য লড়াই করছেন। দিপালী সুজ কারখানার মালিক আজহার উদ্দিন বলেন, ‘একসময় আমি সপ্তাহে ১৫০ ডজন জুতা তৈরি করতে পারতাম। কিন্ত এখন সপ্তাহে ৫০ ডজন জুতারও অর্ডার পাই না।’

চট্টগ্রাম ক্ষুদ্র পাদুকা শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোসলেহ উদ্দিন খাঁন বলেন, উদ্যোক্তাদের কেউই সরকারঘোষিত প্রণোদনার ঋণ পাননি। ‘অনেকেই পুঁজির সংকটে ব্যবসায় ফিরতে পারছেন না। যেসব কারখানা আবার নতুন করে ব্যবসা করছে, তারাও সংকটে রয়েছে।’

এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই ক্ষুদ্র শিল্পখাত টিকিয়ে রাখতে বিদেশ থেকে কিছু অত্যাধুনিক মেশিনারিজ সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করছি। কালুহাটি, ভৈরব ও চট্টগ্রামে এই মেশিনারিজ স্থাপন করা হবে। তা না হলে এই স্বল্প পুঁজির ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পক্ষে এসব দামি মেশিনারিজ কিনে আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকা সম্ভব নয়।’

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন