সিটি করপোরেশনের এক কাঠা জমিও নেই। ঢাকার জমি হচ্ছে রেলওয়ের, রাজউকের, পিডব্লিউডি বা বিভিন্ন ডেভেলপারের। বিভিন্ন ল্যান্ড ডেভেলপার বা দোকান মালিকদের বলব, যদি জায়গা দেন, তাহলে আমরা টয়লেট করে দিতে পারি। এমন কথাই বলেছিলেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
রাজধানীতে ২ কোটি লোকের জন্য গণশৌচাগারের সংখ্যা মাত্র ১০৭টি। এর বেশির ভাগই কয়েক বছর আগে উদ্যোগ নিয়ে বানানো। অনেক স্থানে পার্ক বা ফুটপাতকে পথচারীরা বানিয়ে ফেলেছেন অস্থায়ী শৌচাগার। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনই বলছে, গণশৌচাগারের সংখ্যা তারা বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাদের হাতে বাজেট আছে। কিন্তু সমস্যা জায়গা নিয়ে। শৌচাগার তৈরির জায়গা পাওয়া কঠিন।
রাজধানীতে এখন প্রতি ২ লাখ লোকের জন্য একটি করে গণশৌচাগার।
যে অল্প কিছু গণশৌচাগার দেখা যায়, সেগুলো নতুন হওয়ায় ব্যবস্থাপনা ভালো। শৌচাগারের ভেতরে নারী-পুরুষের জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে। কয়েকটিতে রয়েছে প্রতিবন্ধীদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা। সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস লকারে রেখে শৌচাগার ব্যবহার করা যায়।
নগর কর্তৃপক্ষ যেসব নতুন শৌচাগার স্থাপন করতে যাচ্ছে, সেগুলোয় তারা নতুন আরও কিছু সেবা যোগ করতে চায়। সেখানে বেবি ফিডিং জোন থাকবে। নারীরা সেখানে বাচ্চাদের দুধ খাওয়াতে পারবেন। পাশাপাশি ছোট বাচ্চাদের রেখে টয়লেটে যাওয়ার জন্য একটি কিডস জোন থাকবে।
টয়লেট ব্যবস্থাপনার জন্য টোল নেয়া হয়। এটির তত্ত্বাবধায়ক মো. শাহীন বলেন, ‘টয়লেট ও প্রসাবের জন্য আমরা পাঁচ টাকা করে নেই, গোসলের জন্য নেয়া হয় ১০ টাকা। এ ছাড়া লকারের জন্য পাঁচ টাকা নেয়া হয়। টিস্যু ও হ্যান্ডওয়াশ আমরাই দেই। প্রতিবন্ধী ও গরিব মানুষের জন্য সেবা ফ্রি।’
তিনি জানান, এখানে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ পুরুষ এবং ৫০ থেকে ৬০ জন নারী টয়লেট সেবা নেন। সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই টয়লেট খোলা থাকে। দুই শিফটে তারা দুজন দেখাশোনা করেন। কিছুক্ষণ পর পর তারা এয়ার স্প্রে করেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বর্তমানে গণশৌচাগারের সংখ্যা ৫৬টি। এর ১৯টিই বন্ধ আছে সংস্কারের জন্য। অঞ্চল-৬ থেকে অঞ্চল-১০ পর্যন্ত ৫টি অঞ্চলে কোনো গণশৌচাগার নেই।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের বলেন, তারা আরও ১৬টি গণশৌচাগার স্থাপনের পরিকল্পনা করেছেন, যেগুলোয় আধুনিক সেবা থাকবে। তবে তাদের লক্ষ্য প্রতিটি ওয়ার্ডে একটা করে গণশৌচাগার নির্মাণ। সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে তারা জায়গা দেয়ার জন্য অনুরোধ করছেন। জেলা প্রশাসন, রাজউক ও রেলওয়েকে অনুরোধ করা হচ্ছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন ল্যান্ড ডেভেলপার বা দোকান মালিকদের বলব, যদি জায়গা দেন, তাহলে আমরা টয়লেট করে দিতে পারি। টয়লেট করার জন্য আমার কাছে এখনো ফান্ড আছে, আরও ৩৫টি টয়লেট আমি করতে পারব।’
বস্তিবাসী ও ভাসমান মানুষের জন্য গণশৌচাগারের ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বস্তিবাসী ও ভাসমান মানুষের জন্য কন্টেইনারে ভ্রাম্যমাণ টয়লেট নির্মাণ করতে চায় সিটি করপোরেশন। এটা সহজেই শিফট করা যাবে।
আনন্দবাজার/এম.আর