গত তিন বছর ধরেই শোনা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলছে। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। এ বিষয়ে এখনও কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পর নানা নাটকীয়তায় আটকে যাচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। কারণ হিসেবে রিক্রুটিং এজেন্সির ‘সিন্ডিকেট’ ইস্যুটি বরাবরই সামনে আসছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, অনৈতিক সুবিধালাভ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় জট খুলছে না সবচেয়ে বড় এ শ্রমবাজারের।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশটিতে মানবসম্পদ পাঠাতে পারবে সব এজেন্সি। এখানে কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। সেই লক্ষ্যে কাজ চলছে। এ ব্যাপারে দেশটির (মালয়েশিয়া) সরকারের সাথে শিগগিরই চূড়ান্ত চুক্তি করবে ঢাকা। চুক্তি হয়ে গেলে চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা নতুন বছরের (২০২২ সাল) শুরুর দিকে ফের মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে পারবে বাংলাদেশ।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এ মুহূর্তে বিভিন্ন খাতে প্রায় আড়াই লাখের মতো কর্মীর চাহিদা রয়েছে মালয়েশিয়ায়। এ চাহিদা মেটাতে দেশটি কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী নিতে চায়। এজন্য চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়াও দ্রুত শেষ করতে চায় ঢাকা।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা জানান, অভিবাসীকর্মী সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রক্রিয়াটি প্রায়ই চূড়ান্ত। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি সম্পন্ন হবে। এবার আর সিন্ডিকেট নয়, ডাটাবেজ ভিত্তিতে কর্মী পাঠানো নিয়ে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে চুক্তি করবে। এটি স্বাক্ষর হলেই আমরা কর্মী পাঠানো শুরু করব। আশা করছি, ডিসেম্বর না হলেও জানুয়ারির মধ্যে এটি চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস জানান, সবকিছু প্রায় ফাইনাল হয়ে আছে। কদিন আগেই বিষয়টি নিয়ে মিটিং (বৈঠক) হয়েছে। আমাদের মিশন চাচ্ছে এমওইউ (সমঝোতা স্মারক) দ্রুত সই করতে। এটা হয়ে যাবে। এমওইউ সই হয়ে গেলে আমরা আবার নতুন করে কর্মী পাঠানো শুরু করতে পারব।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার চেষ্টা বারবার ব্যাহত করেছে। তাদের তৈরি সিন্ডিকেটের অবৈধভাবে এ বাজার দখলের চেষ্টায় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এটি বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ কমিটির বৈঠকে ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশের শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করে দেয়া হয়।
আনন্দবাজার/ টি এস পি