জনগুরুত্বপূর্ণ বগা সেতু নির্মাণের দাবী উঠেছে। বগা সেতু নির্মাণ হলে বাউফল, দশমিনা ও গলাচিপা উপজেলার মানুষের সড়ক পথে ঢাকা ও বরিশাল যেতে আর কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না। তাই বগা সেতু নির্মাণ এখন এলাকাবাসীর প্রাণের দাবী। কিন্তু বগা সেতু নির্মাণের বিষয়টি চিঠি চালাচালিতেই ঝুলে আছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সেতু নির্মাণে বিলম্বের কারনে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে নবম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী (বগা) সেতু নির্মাণের লক্ষে ২০১৭ সালের ১১মে মাসে ৫০০ মিলিয়ন আরএমবি ইউয়ান অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব এবং চীনা রাষ্ট্রদূতের মধ্যে।
চুক্তি অনুযায়ী, সেতু, অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জন্য এই অর্থ ব্যয় করার কথা। আর ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, পানি, বিদ্যুৎ সরবরাহে সমুদয় অর্থের ব্যায়ভার নেবে বাংলাদেশ সরকার। এর আগে ২০১৬ সালের ২৪ মে সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে বগা ফেরিঘাট এলাকা পরিদর্শনে আসেন চীনের একটি প্রতিনিধিদল। ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ডিপিপি প্রনয়ণে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ব্রিজ ম্যানেজমেন্ট উইং এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (চঃ দাঃ) রওশন আরা খানম পটুয়াখালী জেলা সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জমি অধিগ্রহণ, জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্থ লোকের সংখ্যা ও ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমান জানাতে চিঠি পাঠান। অবশ্য আজ পর্যন্ত সেতু নির্মাণের জন্য সম্ভাব্য এলাকায় শুরু হয়নি এসব তথ্য সংগ্রহের কাজ। বাউফল, দশমিনা ও গলাচিপা এই তিন উপজেলার ২০লক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ও আন্দোলন সংগ্রামের পরেও সেতু নির্মাণের জন্য এই বিলম্বের কারনে ক্ষোভ জানিয়েছেন অনেকেই।
বাউফলের ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা ডিগ্রি কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক মো. অহিদুজ্জামান সুপন সাংবাদিকদের বলেন, বাউফল, দশমিনা ও গলাচিপা উপজেলার লক্ষ লক্ষ মানুষের পদ্মা সেতু ও লেবুখালী সেতু নির্মাণের পরিপূর্ণ সুফল পেতে বগা সেতু নির্মাণের কোনই বিকল্প নেই। এই সেতুটি নির্মিত হলে ওই তিন উপজেলা উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত হবে। বগা সেতু নির্মাণ হলে তিন উপজেলার লাখ লাখ মানুষের দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রাম সফল হবে। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগ ও ফেরী পারাপারের মতো আর কোন বিড়ম্বনা থাকবে না। শিগগিরই এই সেতুটি নির্মাণ করা প্রয়োজন।
দশমিনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এইচএম ফোরকান বলেন, বগা সেতু নির্মাণ হলে সড়ক পথে ঢাকায় যেতে কমপক্ষে ২ ঘন্টা সময় বাঁচবে। আর সাথে ভোগান্তি কমে যাবে। তিনি বলেন, পদ্মা ও লোহালিয়া সেতুর সুফল পেতে হলে এখনই বগা সেতু নির্মাণ করা জরুরী।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালীর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, দুই এক বছরের মধ্যে বগা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
অবশ্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের পটুয়াখালী সার্কেলের (সড়ক) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ইমদাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০১৯সালে আমরা মন্ত্রণালয়ে এই সেতুটি নির্মাণের বিষয়ে বেশ কিছু চিঠি পাঠিয়েছি। আগামী এক দুই মাসের মধ্যে সেতু নির্মাণের জন্য চীনা প্রতিনিধি দলের প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে আসার কথা রয়েছে। তারা পরিদর্শন করার পরই সেতু নির্মাণের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।
আনন্দবাজার/শহক