সাম্প্রতিক আতঙ্কের আরেক নাম করোনা ভাইরাস। চিনের উহান শহর থেকে উৎপত্তি হওয়া মহামারী এ ভাইরাসে লাখ লাখ মানুষের প্রানহানি ঘটে। শুধু লক্ষ্য করা যায় চারদিকে মৃত্যুর মিছিল। অদৃশ্য করোনাভাইরাসের ভয়ংকর ছোবলে ক্রমেই তছনছ হয়ে যাচ্ছে বিশ্বের স্বাভাবিক পরিস্থিতি। দিন দিন আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ ও রাষ্ট্রযন্ত্রের নানাবিধ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের সার্বিক অবস্থা এখনো নিয়ন্ত্রণেই বলা যায়।
চারিদিকে যখন এরকম থম-থমে পরিবেশ ঠিক সেই- সময় সক্রিয় ভয়াবহ মাদকের সিন্ডিকেট। যদিও আইন শৃঙ্খলা বাহীনি একের পর এক অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হচ্ছে কিন্ত অধিকাংশ মাদক ব্যবসায়ীরাই থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে জাতিকে রক্ষার নানান পদক্ষেপ গ্রহন করেছে সরকার। ঠিক সেই মুহুর্তেও দেশকে ধ্বংসের হাতিয়ার হিসেবে করোনা ভাইরাসকে উপেক্ষা করে দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশের সাথে বন্ধুত্ব করে অভিনব পন্থায় ফাঁকি দিয়ে লোকচক্ষুর অন্তরালে তরুন প্রজন্মকে ঠেলে দিচ্ছে ভয়াবহ এই মাদকের নেশায়।
বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে আইন শৃঙ্খলা বাহীনি সচেতনতা বৃদ্ধিতে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। ঠিক সেই- সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে নব্য গজিয়ে উঠা ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। সুত্র জানায়, ভয়াবহ এ মাদক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানা এলাকায়। এক সময়ে এলাকাটি ছিল সম্পুর্ন মাদকমুক্ত। বর্তমানে এ এলাকাটি মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। বাড়ছে মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীদের সংখ্যা, এলাকাটি জুড়ে মাদকের বিস্তার এতটাই বিস্তার লাভ করেছে যেন ১২ বছরের শিশুটিও মাদক বিক্রি ও সেবন থেকে বাদ পড়ছে না। এছাড়াও এলাকাটিতে অবাধ মাদক ব্যবসা ও সেবনের কারণে এলাকার উঠতি বয়সের যুবকরা দিন-দিন মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে বাড়ছে সামাজিক ব্যাধী , দুরত্ব ,ধংস হচ্ছে পরিবার। এলাকাবাসী জানায়, এলাকাটিতে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চলে আসছিল। প্রশাসনের অভিযানে চিহ্নিত ২/১ জন ধরা পড়লেও অধিকাংশ-ই বিভিন্ন কৌশল পালটে থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে।
ভয়াবহ এ মাদক সিন্ডিকেটের সাথে দক্ষিণ আইচা থানা এলাকায় মুছা মাজির ছেলে কুখ্যাত সন্ত্রাস ও ডাকাত বাহিনীর সদস্য বাবুল বেপারী ও গনি সর্দারের ছেলে আবদুর রহিম সর্দার সহ অসংখ্য, উঠতি বয়সি তরুণ জড়িত রয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ওরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকাটির বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মাদক সেবন ও কেনাবেচার সাথে জড়িত। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে অবস্থান বদলে ইয়াবা বিক্রির এক সিন্ডিকেট গড়ে তুলে গজিয়ে উঠা নব্য এ মাদক ব্যবসায়ীরা।
তাদের কথামতো নির্ধারিত স্থানে গিয়ে চাহিদা মতো ইয়াবা কিনছে ও তা সেবন করছে মাদকসেবীরা। এর মধ্যে একাধিক মাদক ব্যবসায়ী এলাকাবাসির তোপের মুখে মাদক সিন্ডিকেটের সাথে জড়িতদের নামও প্রকাশ করেছে। একাধিক মাদক ব্যবসায়ী জানায়, এ এলাকাটিতে মাদকের মুল হোতা হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে মুছা মাজির ছেলে কুখ্যাত সন্ত্রাস ও ডাকাত বাহিনীর সদস্য বাবুল বেপারী, ও গনি সর্দারেন ছেলে আবদুর রহিম সর্দার।
সূত্র আরো জানায় দক্ষিণ আইচা থানা এলাকায় বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলের কুখ্যাত সন্ত্রাস ও ডাকাত বাহিনীর সদস্য বাবুল বেপারী বর্তামানে দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশের কাঁধে হাত দিয়ে মাদক বিক্রি সহ এলাকার বিভিন্ন স্থানে জুয়া লেখাল আসর বসিয়ে যুব সমাজকে নষ্ট করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
মাদক ব্যবসায়ীরা জানায়, বর্তমানে চরফ্যাশন দক্ষিণ আইচা এলাকাটিতে মাদকের গডফাদার হিসেবে বাবুল বেপারীকে বলা হয়। বাবুল বেপারী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থান থেকে মাদক ক্রয় করে এলাকার উঠতি বয়সি তরুণদের কাছে বিক্রি করছে। আর এ পুরো বিষয়টি তার নিজ কৌশল অবল্মবন করে মাদকের বিস্তার ঘটিয়ে যাচ্ছে। অভিনব এ কৌশল অবলম্বন করে বাবুল বেপারী ও তার সহযোগীরা থেকে-ই যাচ্ছে ধরা-ছোয়ার বাইরে।
জানা যায়, বাবুল বেপারী মাদক ব্যবসা জড়িত হওয়ার পর হঠাৎ করেই তিনি আঙ্গুল ফুলে যেন কলাগাছ হয়েছেন। ক্রয় করেছেন জমিও। বাবুল বেপারীর বিরুদ্ধে ইতিপুর্বে স্থানীয় একাধিক পত্রিকায় মাদক সংশ্লিস্টতার সংবাদও প্রকাশ করা হয়। এদিকে বাবুল বেপারীকে মাদক সংক্রান্ত ও অপরাধ সংক্রান্ত বেপারে সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশ। ইতিপুর্বে বাবুল বেপারীর আপন বাগিনা আবদুর রহিম সর্দার মাদক মামলায় কারাভোগ করেছে। রয়েছে একটি মাদক মামলাও। যদিও জামিন পায় মাদক থেকে নিজেকে মুক্ত রাখবে এই শর্তে কিন্ত বর্তমানে এলাকায় বাবুল বেপারী রয়েছে মাদক বিক্রির বিশাল সিন্ডিকেট। মাদক ব্যবসায়ী বাবুল নিজে ইয়াবা সেবনের পাশাপাশি বিক্রি সহ এলাকার ১৫-১৬ বছর বয়সী তরুনদের বাধ্য করছে মরনব্যাধি এ মাদক ব্যবসায় ও জুয়া খেলায়।
এলাকাবাসী জানায়, বাবুল বেপারী এলাকার এক চিহ্নিত মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ী। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মাদক বিক্রি সহ সেবনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এদিকে এলাকাবাসী যদিও বিভিন্ন সময়ে তাদের সাবধান কিংবা প্রতিবাদ করতে গেলে উলটো এলাকাবাসীদের বিপদের সুম্মুখিন হতে হয়। তাই এদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতেও রাজি হয়না। দিন যতই যাচ্ছে বেপরোয়া হয়ে উঠছে দক্ষিণ আইচা এলাকার মাদকের এ ভয়াবহ সিন্ডিকেট। এদের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে এলাকাটি মাদকের স্বর্গরাজ্য পরিনত হবে।
তরুন প্রজন্মকে মাদকের এ ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। শীঘ্রই এলাকাটির স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে এলাকাবাসি জেলা পুলিশ সুপার মহোদয় ও চরফ্যাশন সহকারী পুলিশ সুপার মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ বিষয়ে দক্ষিণ আইচা থানার ওসি হারুন অর রশিদ জানান, সর্বদা মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স।
আনন্দবাজার/শাহী/তৈয়বুর