জাপান থেকে আসা মেট্রোরেলের মেট্রোরেলের কোচগুলো আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিয়াবাড়ির ডিপোতে নেওয়া শুরু হয়েছে। আজ সকাল আটটার দিকে ক্রেন দিয়ে কোচ লরিতে তোলার কাজ শুরু হয়। একই লরিতে করে আজ মোট চারটি কোচ ডিপোতে নিয়ে যাওয়া হবে। জেটিতে অবস্থানরত বাকি দুটি কোচ নামিয়ে আগামীকাল শুক্রবার সকালে ডিপোতে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
এর আগে নির্ধারিত সময়ের দুই দিন আগেই গতকাল বুধবার বিকালে সোয়া ৪টার কোচ বহনকারী বার্জ তুরাগ নদী হয়ে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে অবস্থিত ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) জেটিতে পৌঁছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক।
তিনি জানান, প্রথম চালানে মেট্রোরেলের ছয়টি বগি আছে। ২৩ এপ্রিল বগিগুলো আসার কথা ছিল। গত ৪ মার্চ জাপানের কোবে বন্দর থেকে এমভি এসপিএম ব্যাংক নামে একটি জাহাজযোগে এসব বগি পরিবহন করা শুরু হয়।
গত ২৪ মার্চ পায়রা বন্দরে বগিগুলো পৌঁছে। ৬টি বগি নিয়ে পায়রা বন্দর থেকে জাহাজটি গত ৩০ মার্চ মোংলা বন্দরে পৌঁছে। ৩১ মার্চ এগুলো জাহাজ থেকে খালাস করা হয়। পরে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে নদীপথে বগিগুলোর পরিবহন শুরু হয়। গত সোমবার চাঁদপুর এসে পৌঁছায় বগিগুলো। সেখান থেকে নৌপথে গতকাল ঢাকায় এলো।
প্রকল্প নথি অনুসারে, জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়ামকে ২৪ সেট ট্রেন নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় ২০১৭ সালে। দুই পাশে দুটি ইঞ্জিন আর চারটি কোচের সমন্বয়ে ট্রেনের সেটগুলো তৈরি হচ্ছে জাপানে। এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়েছে পাঁচ সেট ট্রেন, যার প্রথমটি দেশে এসে পৌঁছেছে। দ্বিতীয় সেট জাপান থেকে ১৫ এপ্রিল রওনা হওয়ার কথা। সেটি পৌঁছাতে পারে আগামী ১৬ জুন। আর তৃতীয় সেট ১৩ জুন রওনা দিয়ে ১৩ আগস্ট পৌঁছাতে পারে। বাকি দুটি সেটের আসার সময়সীমা এখনো ঠিক হয়নি।
সব মিলিয়ে ২৪ সেট ট্রেনের দাম পড়ছে ৩ হাজার ২০৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। শুল্ক ও ভ্যাট মিলিয়ে এসব ট্রেন বাংলাদেশে আনার পর মোট খরচ হবে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ট্রেনগুলোয় ডিসি ১৫০০ ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা থাকবে। স্টেইনলেস স্টিল বডির ট্রেনগুলোয় থাকবে লম্বালম্বি সিট। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে দুটি হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত প্রতিটি বগির দুই পাশে থাকবে চারটি করে দরজা। জাপানি স্ট্যান্ডার্ডের নিরাপত্তাব্যবস্থা-সংবলিত প্রতিটি ট্রেনের যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে ১ হাজার ৭৩৮ জন। ভাড়া পরিশোধের জন্য থাকবে স্মার্ট কার্ড টিকিটিং ব্যবস্থা।
আনন্দবাজার/শহক