করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকার বিপর্যস্ত নারীদের জন্য যে প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছিল, ৫৮.৬ শতাংশ নারীই সে সম্পর্কে জানেন না। গতকাল বৃহস্পতিবার ‘সরকারের আর্থ-সামাজিক পুনরুদ্ধার ব্যবস্থা : নারীরা কতটা উপকৃত হয়েছে’, শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে এ তথ্য তুলে ধরেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
জরিপের তথ্য পর্যালোচনা করে ফাহমিদা খাতুন জানান, করোনার প্রকোপে গত বছর মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫৪ শতাংশ গৃহকর্মী ও ১৯ শতাংশ নারী গার্মেন্টকর্মী তাদের চাকরি হারিয়েছেন। এতে ব্যাপক দারিদ্র্যের সম্মুখীন হয়েছেন তারা। এছাড়া লকডাউনের মধ্যে দেশে ৪৯ শতাংশ নারীই নিরাপদে ছিলেন না। এই অতিমারির মধ্যেও বাল্যবিয়ে বেড়েছে ৫৮ শতাংশ। সেই সাথে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই একজন মায়ের বাচ্চা জন্ম হওয়ার মতো সামাজিক সমস্যাগুলো বেড়েছে।
এছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চল কিংবা গ্রামে মাত্র ২ শতাংশ শিশু করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অনলাইনে ক্লাস করতে পেরেছে। গত বছর অক্টোবরে টেলিফোনের মাধ্যমে ৩৪টি জেলার ৭০ জন নারী উদ্যোক্তার ওপর একটি সার্ভে করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৫১.৪ শতাংশ এসএসসি পাস, ২৪.৩ শতাংশ এইচএসসি পাস, ১৭.১ শতাংশ অনার্স পাস ও ৪.৩ শতাংশ মাস্টার্স পাস। তবে তাদের মধ্যে ২৭ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা বা কোনো না কোনো বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত। এবং বাকি ৭২.৯ শতাংশ কোনো রকমের অ্যাসোসিয়েশনের সাথে যুক্ত নয়। কোনো বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের সাথে যুক্ত না থাকায় ব্যাংক কিংবা অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান উদ্যোক্তাদের লোন পেতে বেগ পেতে হয়েছে।
যার মধ্যে ৪৮ শতাংশ নারী জানান, তাদের ব্যবসা সামনে নিয়ে যাবেন ও ৪১.১ শতাংশ ব্যবসা পুরোপুরি গুটিয়ে নেবেন। ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে যেন তারা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব থেকে উপকৃত হতে পারেন।
এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কাজের অগ্রগতি নেওয়া হয়েছে। কাজ হারানো গৃহকর্মী ও গার্মেন্ট শ্রমিকদের দিকে নজর দেওয়া হবে। কারণ এটি অনানুষ্ঠানিক খাত হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের অনেক মানুষ আছে যারা জানেই না যে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এটা অবাক করার মতো বিষয়, কারণ দেশে অনেক গণমাধ্যম রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে কাজ করা হবে।
আনন্দবাজার/টি এস পি