ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রাম আছে রাস্তা নেই, আছে সুপেয় পানির অভাব

পাইকগাছায় গ্রাম আছে কিন্তু নেই যাতয়াতের ভাল কোন রাস্তা। গ্রামটির চারপাশে রয়েছে বিশাল মৎস্য ঘের। নেই খাওয়ার উপযোগী কোন পানীয় জলের ব্যবস্থা!

স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ ৫০ বছরে অনেক নেতা, চেয়ারম্যান, মেম্বর এলো গেল কিন্তু গ্রামবাসী শুধু আশ্বাস পেলেও পাইনি একটা রাস্তা! গ্রামটিতে পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস থাকলেও তাদের খবর নেয়ার মত কেউ নেই। বর্ষা মৌসুমে দুর থেকে দেখলে মনে হয় যেন কোন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ! গ্রামটি পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী ইউপির ওড়াবুনিয়া গ্রাম নামে পরিচিত।

সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, গজালিয়া চৌরাস্তা থেকে পশ্চিমে কয়েক কিলোমিটার লম্বা গ্রামটি। যাতায়াতের জন্য একটা মাটির রাস্তা থাকলেও সেটি অত্যন্ত সরু ও নিচু। রাস্তার পশ্চিম প্রান্তে রাস্তার উপর বাঁশের সাকো দেখা যায়। বর্ষা মৌসুমে থাকে জলমগ্ন। গ্রামে একটা প্রাইমারী স্কুল থাকলেও হাইস্কুলে বা কলেজে যেতে শিক্ষার্থীদের পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। এক প্রকার বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীরা যাতয়াতের জন্য স্কুল কলেজে যেতে পারেনা। গ্রামের মহিলাদের খাওয়ার পনির আনতে হাঁটতে হয় প্রায় ৬ কিঃ মিঃ পথ। গ্রামের ভিতর চলেনা কোন প্রকার যানবাহন। হাঁটাই গ্রামবাসীর নিত্য সঙ্গী।

গ্রামের বাসিন্দা তপন কুমার মন্ডল বলেন, আমি একজন শিক্ষক, বর্ষা মৌসুমে আমাকে স্কুলে যেতে হলে দু’টি ড্রেজ নিয়ে বের হতে হয়! কয়েক কিঃ মিঃ রাস্তা পানি ঠেলে পায়ে হেঁটে যেতে হয়! সারাদেশে সহ পাইকগাছার অন্য ইউনিয়নে উন্নয়ন হলেও আমাদের গ্রামে বিদ্যুৎ ছাড়া আর কোন অবকাঠামোগত কোন উন্নয়ন হয়নি আজো।
শিবানী মন্ডল নামে ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে মহিলা জানান, খাওয়ার পানি আনতে তাকে প্রতিদিন প্রায় ৫ কিঃমিঃ পথ হেঁটে যাতায়াত করতে হয়। সব থেবে বেশি সমস্যা হয় বর্ষা মৌসুমে। রাস্তা না থাকায় তাদের পানির মধ্যে সাঁতরে খাওয়ার পানি আনতে হয়।

ছবি মন্ডল নামে দশম শ্রেনী পড়ুয়া শিক্ষার্থী জানান, তাদের দু’টি ড্রেজ নিয়ে স্কুলে যেতে হয় যাতায়াতের রাস্তার অভাবে। বর্ষা মৌসুমে তাদের এক প্রকার স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকে।

সংশ্লিষ্ট ইউপি মেম্বর নজরুল ইসলাম হিরা বলেন, রাস্তার দু’পাশে মৎস ঘের ও সরকারী খাল থাকায় রাস্তার কাজ করা সম্বব হয়না। বাঁশের সাঁকো ও মেরামত করা হলেও বর্ষা মৌসুমে পানির চাপের কারণে ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তার দু’পাশে পাইলিং করে মাটি দিয়ে উচু করতে পারলে হয়তো রাস্তাটি টিকবে। ইউনিয়ন পরিষদের এতোবড় বাজেট না থাকায় কাজ করা সম্ভব হচ্ছেনা। কাবিখা প্রকল্পে ৩ লাখ টাকার বাজেট করেও কাজ করতে না পেরে প্রকল্পটি গড়ের আবাদ গুচ্ছ গ্রামে নেয়া হয়েছে।

চাঁদখালী ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ আক্কাস ঢালী বলেন, ওড়াবুনিয়া রাস্তার মাপজোপ করা হয়েছে। আগামিতে রাস্তা সহ কালবার্টের কাজ করা হবে।
পাইকগাছা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, ওড়াবুনিয়া পার্শে খালের উপর একটা ব্রিজের জন্য পরিমাপ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আছে।

আনন্দবাজার/শাহী/ইমদাদ

সংবাদটি শেয়ার করুন