রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা সিলেট মহাসড়ক এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েছে

ব্যস্ততম ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা বহুগুনে বেড়ে গেছে। মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলার কারণে। আবার শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালির পরিমান বেড়ে যাওয়ায় পথচারীসহ এলাকার জনসাধারণ দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবার ঝুকিতে পড়েছে বয়োজ্যেষ্ঠ ও সাধারণ মানুষ।

ধুলায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী, মহাসড়কে বিশেষ ব্যবস্থায় নিয়মিত পানি না ছিটানো, অপরিকল্পিতভাবে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি ও যেখানে সেখানে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখার মতো অনিয়ন্ত্রিত কর্মকাণ্ডের ফলে রূপগঞ্জের তারাব সহ আশেপাশের এলাকায় ‘ বায়ু দূষণ’ নিত্যদিনের ঘটনা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে এক লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আর বায়ুদূষণের কারণে শিশুমৃত্যুর হারের দিক থেকে পাকিস্তানের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।

সরেজমিনে দেখা যায়, ধুলায় উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল, কলেজ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতী শিক্ষার্থীসহ রোগীদের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে চরমে। ধুলার কবলে পড়ে এ সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের নাকে হাত দিয়ে চলাচল করতে হয়।

চিকিৎসকরা বলছেন, জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে ‘ধুলা দূষণ’। বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট ও হৃদরাগের প্রকোপ দ্রুত বেড়ে যাওয়ার পেছনে বায়ুর সঙ্গে মিশে থাকা নানা রাসায়নিক দূষণই দায়ী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারাবো পৌরসভার মেয়র হাসিনা গাজী বলেন, পৌরসভা থেকে প্রতিদিন দুইবেলা পানি দেওয়া হয় তারপরও ধুলোবালির প্রকোপ কমানো যাচ্ছে না। মুলত শুষ্ক মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে ধুলা বালির প্রকোপ বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর দেশের প্রচুর মানুষ শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। আনার মারাও যাচ্ছেন। এই অবস্থায় বায়ুদূষণ কমাতে একটা সমন্বিত কার্যক্রম হাতে নেয়া দরকার বলে মনে করছেন অনেকে। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় সূক্ষ ধুলিকণা বাতাসে ভেসে বেড়ায়। এজন্য মহাসড়কের জনবসতিপূর্ণ এলাকায় নিয়ম করে পানি স্প্রে করা, মহাসড়কের পাশে যত্রতত্র ময়লাফেলা বন্ধ করাও জরুরি বলে মনে করছেন তারা।

আরও পড়ুনঃ  বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে আরও ৩দিন

পরিবেশবিদরা বলেন, ডিজেল- পেট্রল-অকটেন চালিত পরিবহন বা কলকারখানা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া বাতাসকে দূষিত করে। রাস্তাঘাটে জমে থাকা ধুলা, সড়ক মেরামতের সামগ্রী, নির্মাণসামগ্রী সময়মতো অপসারণ না করা বা সঠিকভাবে ঢেকে না রাখার কারণেও বায়ুদূষণ হচ্ছে। দূষণ জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ নাহিদ আরা বেগম জানান, ধুয়া ও ধুলাজনিত দূষণের ফলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, অ্যাজমা, শিশুদের নিউমোউনিয়া, চক্ষুরোগ প্রভৃতি রোগের জীবাণু ছড়ায়। রাস্তার পাশের বা ফুটপাতের দোকানে রাখা খাবারও ধোঁয়া-ধুলায় দূষিত বা বিষাক্ত হয়ে পড়ে। এসব খেয়ে মানুষ রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে। দূষণজনিত কারণে ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগ দেখা দিতে পারে।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা শাহ নুসরাত জাহান বলেন, ধুলা পরিবেশের জন্য হুমকি। রাস্তা থেকে ধুলাবালি পরিশোধনের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। অতি শীঘ্ই আমরা এ জনদুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবো।

আনন্দবাজার/শাহী/ফয়সাল

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন