সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের ঘোড়াডোবা হাওরের আওতায় থাকা বোয়ালা ফসলরক্ষা বাঁধের তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের মধ্যে এবার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে করে ওই ফসলরক্ষা বাঁধ সংলগ্ন বোয়ালা হাওরের ৮০০হেক্টর বোরো জমির ফসল ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজটি বাদ না দেওয়ার জন্য পুনরায় এতে কাজ করার দাবি জানিয়ে এলাকার কৃষকদের পক্ষে উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রবীর বিজয় তালুকদার গত রোববার (৫ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী ইউএনর কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন স্থানীয় এলাকার কয়েকজন কৃষক জানান,
উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের জগন্নাথবাড়ীর পেছন থেকে বৈঠাখালী হয়ে জমশেরপুর পর্যন্ত ঘোড়াডোবা হাওরের বোয়ালা ফসলরক্ষা বাঁধের আওতায় সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে গত কয়েক বছর ধরে তিনটি প্রকল্প কাজ বাস্তবায়ন হয়ে আসছে। কিন্ত এবার সেখান থেকে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ বাদ দেওয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় আগাম বন্যার পানি ওই বাঁধটি ভেঙে বোয়ালা হাওরে পানি ঢুকে এখানকার ৮০০হেক্টর বোরো জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের ধর্মপাশা উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আলা উদ্দিন বলেন, যে প্রকল্প কাজটি এবার বাদ দেওয়া হয়েছে সেটি বোয়ালা হাওরে ফসলরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাঁধের স্থানটিও নিচু। তাই বাঁধটির প্রকল্প স্থানটিতে এবার কাজ না হলে আগাম বন্যার পানিতে বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা প্রয়োজন।
মধ্যনগর ইউনিয়নের মধ্যনগর বাজার এলাকার বাসিন্দা কৃষক অজয় রায় (৭৫) বলেন, আমাদের ঘোড়াডোবা হাওরের বোয়ালা ফসলরক্ষা বাঁধের ওই প্রকল্প কাজটি বাদ দেওয়া একদম ঠিক হয়নি। এটি বাদ দিয়ে নতুন যে বাঁধের কাজ করা হচ্ছে এতে স্থানীয় কৃষকদের মতামতের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও আমাদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। নতুন এই বাঁধটি হলে আমার এক হাল বোরো জমি নষ্ট অইবো। এইডা আমি কুনু অবস্থাতেই মেনে নিতে পাববনা। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মধ্যনগর ইউনিয়ন পরিষদ ( ইউপি) চেয়ারম্যান প্রবীর বিজয় তালুকদার বলেন,ওই বাঁধের প্রকল্প স্থানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এলাকার কৃষকদের পক্ষ নিয়ে ওই হাওরের বোরো ফসলরক্ষায় বাদ পড়া প্রকল্প স্থানটিতে পুনরায় কাজ করার জন্য আমি ইউএনও স্যারের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছি।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারি প্রকৌশলী ও উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব মো. এমরান হোসেন বলেন, যে প্রকল্প কাজটি এবার বাঁধ দেওয়া হয়েছে সেই প্রকল্প কাজটি উপজেলার সোমেশ্বরী নদীর তীরে অবস্থিত। তাই এখানকার কৃষকদের ফসলরক্ষায় ঝুঁকি এড়াতে আমরা অ্যালাইনমেন্ট বদল করে বিকল্প নতুন বাঁধের কাজ শুরু করেছি। বিষয়টি উপজেলা কমিটি ও জেলা কমিটির সদস্যরা অবগত রয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) মো.মুনতাসির হাসান বলেন, এ সংক্রান্ত একটি আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি অতীব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
আনন্দবাজার/শাহী/মোবারক